আজ টাইগারদের টার্গেট সিরিজ জয়
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:৪২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস
দিনের শেষে ডেস্ক : টাইগাররা গত তিন মাসে টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ১০ ম্যাচে জয় পেয়েছে ৮টিতে। যা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এক অনন্য নজির। এ রেকর্ড আরো সমৃদ্ধ করতে আজ কিউইদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অষ্টম ম্যাচে সপ্তম জয়ের খোঁজে নামবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা আজ জিতলে সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে।
জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলে তা হবে টানা তৃতীয় সিরিজ জয়। আজকের ম্যাচের আরেকটি মাহাত্ম্য রয়েছে। আর তা হচ্ছে টাইগার অধিনায়কের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১০০তম ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রথম ও বিশ্বের অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০তম ম্যাচ খেলবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আজ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে টস করতে নামলেই এ মাইলফলক স্পর্শ করবেন রিয়াদ। এই ম্যাচকে ঘিরে বাড়তি উন্মাদনা কাজ করছে মাহমুদউল্লাহর মধ্যে। নিজের সেঞ্চুরি ম্যাচে সিরিজ জয়ে মরিয়া তিনি। তাছাড়া টানা দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে আরো এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতে প্রথমবারের মতো শীর্ষ ছয়ে উঠে এসেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে বাংলাদেশ ছয় নম্বরে ওঠায় নিচে নেমে গেছে অজিরা। আইসিসির টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে সর্বশেষ হালনাগাদে এক ধাপ এগিয়েছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। কিউইদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জেতার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ সাতে উঠেছিল। কিউইদের বিপক্ষে দুই ম্যাচ জিতে অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সমর্থকরা রানের দেখা পাওয়ায় বেশ খুশি। তাদের প্রত্যাশা আজকের ম্যাচটিও স্পোটির্ং উইকেটে অনুষ্ঠিত হবে। স্লো উইকেটে ৬০ রানের ইনিংস দেখতে নারাজ টাইগার সমর্থকরা। সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট বানানোর পক্ষে তারা। শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতার পর টাইগার অধিনায়ক জানিয়েছেন, রাতে উইকেট তুলনামূলক ভালো আচরণ করেছে। উইকেট আগের ম্যাচের তুলনায় ভালো ছিল। দিনের বেলায় আমরা যখন ব্যাটিং করছিলাম, তখন বল স্পিন করছিল। উঁচু-নিচু হচ্ছিল। রাতে উইকেট আস্তে আস্তে ভালো হতে থাকে।
রিয়াদ মনে করেন, উইকেটের আচরণের ব্যাপারটি দেখলে বাংলাদেশের বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করেছে। তিনি বলেন, এই উইকেটে ১৪১ রানকে ডিফেন্ড করে ম্যাচ জেতানোর জন্য বোলারদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।
২০০৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর কেনিয়ার বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের পথ চলা শুরু। তার অভিষেকের পর বাংলাদেশ খেলেছে ১০৮ ম্যাচ। মাহমুদউল্লাহ ছিলেন ৯৯টিতে। দেশের হয়ে মুশফিকুর রহিম ৮৮ ও সাকিব আল হাসান ৮৬ ম্যাচ খেলেছেন। ব্যাট হাতে মাহমুদউল্লাহর রেকর্ডও ঈর্ষণীয়। শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে কম বলে বেশি রান তোলার তাড়া থাকে। সেই কাজটা ভালোভাবে করেছেন তিনি। ৯৯ ম্যাচে রান করেছেন ১৭০২। স্ট্রাইক রেট ১২০.১৯। আজ কিউইদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্যাট হাতে সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে সক্ষম হবেন বলে সমর্থকদের প্রত্যাশা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচটি টাইগারদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জিতলে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত হবে টাইগারদের। কিউইদের বাংলাওয়াশ করতে পারলে আফ্রিকাকে পেছনে ফেলে শীর্ষ পাঁচে উঠে যাবে বাংলাদেশ।
ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশের ব্যাটিং স্পিন অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহর দাপট নতুন কিছু নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে টপকে টি-টোয়েন্টির সফলতম অধিনায়ক এখন তিনি। এমনকি গত প্রায় দেড় বছর ধরে টি-টোয়েন্টি খেলছেন না তামিম ইকবাল। এই সুযোগে রান সংগ্রাহকের তালিকায় তাকে টপকে গিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি এখন বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে টাইগাররা সংগ্রহ করে ৬ উইকেটে ১৪১ রান। মাহমুদউল্লাহ ৩২ বলে ৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার। তাই ম্যাচসেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
৩৭ রানের এই ইনিংস খেলার পথে টি-টোয়েন্টিতে রান সংগ্রাহকের তালিকায় তামিমকে টপকে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। তামিমের থেকে ঠিক ১ রান বেশি নিয়ে শেষ করেন ম্যাচটি। এখন রিয়াদের সংগ্রহ ৯৯ ম্যাচের ৯১ ইনিংসে ১৭০২ রান। স্ট্রাইকরেট ১২০.১৯। ব্যাটিং গড় ২৩.৯২। অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন পাঁচটি। ৭৪ ম্যাচে তামিমের সংগ্রহ ১৭০১ রান। গড় ২৪.৬৫ এবং স্ট্রাইকরেট ১১৭.৪৭। বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে একমাত্র সেঞ্চুরির পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন সাতটি অর্ধশতক।