আসন্ন বাজেটে ৬ শতাংশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দের দাবি
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ২৩, ২০২০ , ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে ডেস্ক : করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক মন্দা, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও নতুন সৃষ্ট দারিদ্র্য উত্তোরণে কৃষি মন্ত্রনালয়ের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের মোট বাজেটের ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার দাবি করেছে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এছাড়া আসন্ন বাজেটে কৃষিকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে বিবেচনা করা, সরকারের খাদ্য মজুদ করার সামর্থ্য বৃদ্ধি করা, অতি দরিদ্র মানুষের জন্য করোনা পরবর্তী ৬ মাস খাদ্য সহায়তা চালু রাখা, বাজেটে সারের ভর্তুকি কমিয়ে কৃষকেদর নগদে ভর্তুকি প্রদান করা, কৃষিপণ্য মূল্য কমিশন গঠন করা, দুর্যোগকালীন সময়ে কৃষি বাজার ও মূল্য ব্যবস্থাপনার জন্য বহু মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সমন্বয় কমিটি গঠন করার দাবিও জানান তারা। শুক্রবার খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) ও গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের আয়োজনে ‘করোনায় কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা : প্রসঙ্গ জাতীয় বাজেট ২০২০-২১’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে বক্তরা এই সকল দাবি উত্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, এই দুর্দিনে আমার একমাত্র আশ্বস্ত হওয়ার জায়গা ছিল কৃষি। প্রধানমন্ত্রীও সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন এই খাতে। আমিও মনে করি কৃষক সবসময় বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি সবার সাথে একমত যে, এই মুহূর্তে কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হলে কৃষকের হাতে নগদ অর্থ সহায়তা দিতে হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, কৃষকের নায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এটাও অনেকটা সত্যি, বিশেষ করে সবজি চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে কৃষি পণ্য পরিবহন নিয়ে এরই মধ্যে বিআরটিসি ও ডাক বিভাগের গাড়িগুলোকে প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো ভবিষ্যতে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার উদ্দেশ্যে ধান রোপণের পরপরই তালিকা তৈরি করে ফেলা। কারণ ধান বিক্রির সময়ে আমরা কৃষকের তালিকা সঠিক সময়ে হাতে পাচ্ছি না। নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)’র সম্মানিত সভাপতি ড. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বলেন, করোনা পরিস্থিতি আমাদের বাজারব্যবস্থা, কৃষক ও ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণের বড় একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। আমরা এখান থেকে অনেক শিক্ষা নিতে পারি। তবে কৃষকের জন্য আমরা যদি কোনভাবে কৃষি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে পারি এবং শুরুতে যে কতগুলো ফসল নিয়ে কাজ করা যায় সেগুলো নিয়েও কাজ করতে পারি তাহলে ভালো কিছু হতে পারে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ দেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান এবং সেই অনুযায়ী কৃষকের বঞ্চিত হওয়ার ব্যাপারটি তুলে ধরে সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষকের হাতে নগদ অর্থ দিতে বলেন। তার ভাষায়, কৃষককে ক্যাশ সাপোর্ট দিতে হবে। তা না হলে বীজ, সার, অন্যান্য জিনিস কৃষক সময়মতো কিনতে পারবে না। বাজারব্যবস্থাপনা ঠিক করতে হবে। ভোক্তা ও উৎপাদকের মধ্যে সরাসরি সংযোগ্য ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। তার মাধ্যমে দুজনেই সঠিক মূল্য অর্জন করতে পারবে। যদিও এ সংক্রান্ত আমাদের কোনরকম অবকাঠামো নেই। সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, করোনাকালীন সময়ে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে যে ইনোভেশানগুলা এসেছে সেগুলোকে সম্প্রসারণ করতে হবে। সেই সাথে সরকার প্রণোদনা দিয়ে অনলাইন কৃষি বাজার সম্প্রসারণ করতে হবে। সরকারকে কৃষি মার্কেটিংয়ে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। এছাড়া আলোচকরা, করোনা পরবর্তী সময়ে দরিদ্র মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করা, ধান-চাল ক্রয়ে কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় করা, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা করতে কৃষকের হাতে সরাসরি নগদ অর্থে প্রণোদনা দেওয়া, বর্গাচাষিদের ঋণ সুবিধার আনার জন্য নীতিমালা প্রনয়ন করা, কৃষিযন্ত্র উৎপাদনে তরুণদের প্রণোদনা দেওয়া জন্য বরাদ্দ রাখা এবং পারিবারিক কৃষির প্রসারে বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান।