করনোর কারণে খুলনায় চরম দুর্ভোগে হতদরিদ্র মানুষ
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২, ২০২০ , ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
খুলনা প্রতিনিধি : খুলনার হতদরিদ্র মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়ে কাজ হারিয়ে এসব মানুষ বেকার অবস্থায় সময় পার করছে। এদের অনেকের ঘরেই খাবার নেই। নেই গচ্ছিত টাকা। হতদরিদ্র এসব শ্রমজীবী মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। ইতিমধ্যে অনেকের ঘরের সঞ্চিত খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এদিকে, ত্রাণের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুরে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনের সামনে শতাধিক হতদরিদ্র শ্রমজীবী নারী-পুরুষ অবস্থান নেয়। তবে ত্রাণের আশ্বাস নিয়েই তাদের ফিরে যেতে হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, খুলনা মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ছোটো-বড়ো মিলিয়ে বস্তির সংখ্যা ৭২৬টি। এসব বস্তিতে প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে লক্ষাধিক রয়েছেন রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইকচালক। নগরীর ২ নম্বর কাস্টমস ঘাটের বাসিন্দা রিকশাচালক আনোয়ার মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, আমার চার জনের সংসার। করোনার কারণে মানুষ রাস্তায় বের হচ্ছে না। ঠিকমতো রিকশাও চালাতে পারছি না। গত এক সপ্তাহ ধরে বেকার আছি। ঘরে খাবার নেই। বুধবার সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ১০০ টাকাও আয় হইনি। নগরীর বসুপাড়া এলাকায় ষাটোর্ধ্ব অপর এক রিকশাচালক রমজান আলী বলেন, কোনো ভাড়া নেই। কেউ কোনো সাহায্যও করছে না। জানা গেছে, গত তিন দিনেও ডুমুরিয়া উপজেলার হতদরিদ্র বহু মানুষ সরকারি-বেসরকারি কোনো সাহায্য পায়নি। গতকাল বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আরাজি ডুমুরিয়া গ্রামের হতদরিদ্র রিজিয়া বেগম, পাতা বিশ্বাস, অঞ্জলি দাস, পঞ্চ দাস, কৈশালী দাস, গুটুদিয়া গ্রামের জেসমিন আক্তার, রূপা খাতুনসহ প্রায় শতাধিক হতদরিদ্র ক্ষুব্ধ নারী-পুরুষ ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সামনে জড়ো হয়। এ সময় তারা ত্রাণ দেওয়ার জন্য দাবি জানাতে থাকেন। কিন্তু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের সামনে আসেননি। তবে, খবর পেয়ে স্থানীয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জিব কুমার দাস ইউএনওর বাসভবনের সামনে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলে ত্রাণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। এছাড়া নাম ঠিকানাসহ তাদের তালিকা লিপিবদ্ধ করেন। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. শাহনাজ বেগম মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা যে ত্রাণ পেয়েছি, তা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করে দিয়েছি। আবার ত্রাণ এলে যারা পায়নি তাদের যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দেওয়া হবে। খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক জোয়ার্দার জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে খুলনা মহানগরীসহ জেলার বেকার থাকা হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকার নতুন করে ২০০ মেট্রিক টন চাল ও ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর আগে গত ২৫ মার্চ ২৭২ মেট্রিক টন চাল ও ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।