করোনা পরিস্থিতিতে বেশি ঝুঁকিতে আছে শ্রমজীবী শিশুরা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১২, ২০২০ , ৭:১২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : দেশে গত এক মাসে মোট ১৬৩ জন শিশু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বা আক্রান্তের লক্ষণ পাওয়া গেছে। গত ৯ এপ্রিল থেকে ১০ জুন পর্যন্ত মোট ১২৭ জন শিশুর করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। এ সময়ের মধ্যে আক্রান্ত ১২৭ শিশুর মধ্যে ৭ জন মারা গেছে। এ ছাড়া আরো ৩১ জন করোনার লক্ষণ নিয়ে মারা গেছে। বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম এ তথ্য জানিয়েছে। শিশু অধিকার ফোরাম দেশের ২৭২টি বেসরকারি উন্নয়স সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক। এদিকে, এ পরিস্থিতিতে আজ ১২ জুন পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস-২০২০। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০০২ সাল থেকে ১২ জুনকে বিশ্বব্যাপী শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এ বছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘কোভিড-১৯:শ্রম থেকে শিশুদের রক্ষা করা এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি দরকার’। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুস সহিদ মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৮.৭ অর্জনের জন্য ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে সকল ধরনের শিশুশ্রম নির্মূল করার ব্যাপারে কাজ করে আসছিল। সেই লক্ষ্য অর্জনের দিকে যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ সেই অগ্রগতি ব্যাহত করেছে এবং শিশুশ্রম নির্মূলের ব্যাপারে সরকারের এখন পর্যন্ত যতখানি সফলতা এসেছে তা এখন হুমকির মধ্যে রয়েছে। এই মহামারি পরিস্থিতি এবং সেই সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও অনিশ্চয়তা শুধু শিশুদের ঝুঁকি আরো বাড়িয়েই দেয়নি, তার সঙ্গে দেশে শ্রমজীব শিশুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি করেছে। শিশুশ্রম নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের করণীয় বিষয়ে তিনি বলেন, শ্রম আইনের শিশুশ্রম সমপর্কিত অধ্যায়ের সংস্কার করে ১২ বছর বা তার নিচের শিশুদের জন্য ‘হালকা ধরনের কাজ’ এর সংজ্ঞা এবং তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যেখানে ৯৪ শতাংশ শিশু কাজ করে, কিছুনির্দিষ্ট কাজকে নিকৃষ্ট ধরনের কাজ ঘোষণা করে সেসব কাজে শিশুদের নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার করোনা মোকাবিলায় দেশের শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করলেও দেশে কর্মে নিয়োজিত শিশুদের আর্থিক সুরক্ষার জন্য কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেনি। বর্তমান অবস্থায় দেশে স্বল্প মজুরিতে কাজ করানোর জন্য আবারও শিশুদেরকে শ্রমে নিয়োগের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই ব্যাপারে সরকারের উচিত আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেই সঙ্গে স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুরা যেন শ্রমে নিয়োজিত না হয়, সেই ব্যাপারেও প্রস্তুতি রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন।