আজকের দিন তারিখ ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রবিবার, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অকার্যকর স্লুইস গেট বাড়িয়েছে দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অকার্যকর স্লুইস গেট বাড়িয়েছে দুর্ভোগ


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২১, ২০২০ , ২:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : দীর্ঘ বন্যার কবলে চিলমারী। পানিবন্দি মানুষের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে স্লুইস গেট। শহর রক্ষা বাঁধ সাথে অকার্যকর স্লুইস গেট এখন শহরের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। নেই কোন প্রতিকার। সঠিক পদক্ষেপ না থাকায় প্রতি বছর রক্ষা বাঁধ আর স্লুইস গেটটি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় উপজেলাবাসীকে। ফলে দিনের পর দিন দুর্ভোগ বাড়ছে বাঁধের পশ্চিম তীরের মানুষের।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনে নদী পানি অনেকটাই কমে গেছে। শুরুতেই ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদ সীমার ১০৩ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও তা বর্র্তমানে বিপদসীমার ৪২ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত)।

নদী পানি কমে গেলেও বাঁধের পশ্চিম পাড়ের পানি অনেক বেশি হওয়ায় উপজেলা সদরসহ শতাধিক গ্রাম এখনো ডুবে আছে পানিতে। এর মুল কারন হিসাবে উপজেলার পাত্রখাতা স্লুইস গেটটিসহ বাকি গুলোর কার্যকর ব্যবহার নেই বলে দাবি এলাকাবাসীর। তারা আরো জানান, বেশ কয়েকটি স্থানে ছোট ছোট কালভার্ট বন্ধ করে দেয়ায় পানি বের হতে পারছে না। পাত্রখাতা এলাকায় তিস্তা খালের উপর বন্যা নিয়ন্ত্রণ রা বাঁধে নির্মিত ১২টি পানি প্রবাহ পথ বিশিষ্ট এ স্লুইস গেটটি একমাত্র ভরসা। উলিপুরের কিছু অংশ, উপজেলা সদরসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম ও কয়েকটি বিলের পানি এবং অনন্তপুর এলাকার বাঁধের উপর উমুক্ত ব্রীজ দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের পানিও বের হওয়ায় একটি মাত্র পথ এটি। একটি মাত্র পথ এর উপর তা প্রায় সময় থাকে অকেজো হয়ে ফলে চরম এক দুর্ভোগ হয়ে দেখা দিয়েছে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের। পানি প্রবাহ পথ অকেজো হওয়ায় চিলমারী উপজেলা সদরসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম টানা ১সপ্তাহের বেশি সময় ধরে অথৈই পানির নিচে তলিয়ে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চিলমারী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ রা বাঁধে পানি প্রবাহ সামঞ্জস্য রাখতে ১৯৭৬-৭৭ সালে দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪টি স্লুইস গেট নিমার্ণ করে। এর মধ্যে মাগুরা স্লুইস গেটটির পানি প্রবাহ পথ ২টি, চাচলার বিল স্লুইস গেটটির ২টি, কাঁচকোল গেটটির ১০টি ও পাত্রখাতা তিস্তা খালের উপর নির্মিত স্লুইস গেটটি ১২টি পানি প্রবাহ পথ বিশিষ্ট। এ স্লুইস গেটগুলো প্রায় কয়েক বছর বছর আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হলেও অজ্ঞাত কারনে অপারেটর পদটি বিলুপ্ত হওয়ায় তা যেন মরার উপর খড়ার ঘাঁ হয়ে দেখা দিয়েছে। মেরামত ও কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বন্যায় নদীর পানি বাঁধের পশ্চিত পাড়ের চেয়ে প্রায় তিন ফুট কম হলেও পানি প্রবাহের পথ গুলো পুরোপুরি কাজ না করায় দুর্ভোগে হাজার হাজার পনিবন্দি মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সুইস গেট কার্যকারিতা হারিয়েছে কর্তৃপরে উদাসীনতায়। এতে সৃষ্ট দীর্ঘবন্যার কবলে পড়েছে উপজেলা সদর, প্রায় শতাধিক গ্রামসহ পাশ্ববর্তী উপজেলা উলিপুরের কিছু অংশ এবং প্রতি বছর নষ্ট হয়ে যায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। চিলমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশিক ইকবাল বলেন ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে বাঁধের পূর্ব পাড়ের নিন্মাঞ্চল, নদীর তীরবর্তী এলাকার বন্যা মুক্ত হলেও স্লুইস গেটটের সমস্যার কারনে চিলমারী সদরসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম এখনো অথৈই পানিতে ডুবে আছে। এলাকাবাসী জানান, স্লুইস গেটটির কয়েকটি গেট খুলে দেয়া হলেও তা পুরোপুরি না খোলার কারনে পানি প্রবেশ পথে ময়লা আর্বজনা আটকে পানি প্রবেশে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে ফলে খুব ধীরগতিতে পানি বের হওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়ে বন্যার কবলে পড়েছে চিলমারী সদরসহ তিনটি ইউনিয়ন। পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম আরিফুল ইসলাম বলেন সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।