গুলিবিদ্ধ সিনহা অক্সিজেন চাইতেই আরো দুই গুলি!
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৮, ২০২০ , ৮:০৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
জানা গেছে, কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিনড্রাইভে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি’র তল্লাশি চৌকি রয়েছে। অন্যান্য চেকপোস্টের থেকে শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টটি একটু আলাদা। অন্য চেকপোস্টগুলো নির্জন জায়গায় হলেও এই চেকপোস্টটির পাশে বাজার, মসজিদ, লোকালয় রয়েছে। অটোরিকশা চালক বলেন, ঘটনার পর সেই মিনি পিকআপ চালক বেলাল ওরফে আবুইয়া তাকে বলেছেন হাসপাতালে নেবার পথে সিনহাকে আরো দুই রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। তিনি বলেন, গাড়ি করে নিয়ে যাচ্ছিল। সে অবস্থায় গুলিবিদ্ধ লোকটি অক্সিজেন চেয়েছিল। তখন তাকে আবার দুইটি গুলি করা হয়।
এরই সূত্র ধরে উখিয়ায় চালক আবুইয়ার বাড়িতে যায় প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার পর থেকেই আবুইয়া নিরাপত্তা হেফাজতে আছে। তবে তার পরিচিতজনরা জানান, গুলি করার ভয় দেখিয়ে তাকে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিয়ে গেছে। হাসপাতাল থেকে আসার পর অনেকটাই ভীতসন্ত্রস্ত ছিলেন তিনি।
পরিচয় গোপন রেখে একজন বলেন, লাশ দেখে আবুইয়া ভয় পেয়েছে। শুধু এই কথাটুকুই বলেছে। ত্রিপলের মধ্যে রক্ত লেগেছিল। সেটা তার বাবা ধুয়ে দিয়েছে। এদিকে পুলিশের করা এজহারে ঘটনাস্থলে ইন্সপেক্টর লিয়াকত আত্মরক্ষার্থে ৪ রাউন্ড গুলি করেছে বলা হয়েছে। তবে পুলিশের করা সুরতহালে সিনহার গায়ে ৬টি গুলির গভীর ক্ষতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
সিনহার মৃত্যুর পর ৩ জনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তৎকালীন বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের প্রধান লিয়াকত। এরমধ্যে ওসি ও এসপিও রয়েছে। হত্যার বিষয়ে কথা হলেও মাদক বা অস্ত্র উদ্ধারের কোনো তথ্য ফোনালাপে পাওয়া যায়নি। ৩১ জুলাই রাত ৯টা ৩০ মিনিটে তৎকালীন বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের প্রধান লিয়াকত তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের অফিসিয়াল নম্বরে ফোন করেন। তিন মিনিট কথা বলেন তারা।
এরপর ৯টা ৩৩ মিনিটে মালখানার ইনচার্জ কনস্টেবল আরিফের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করেন। তার সাথে ১ মিনিট কথা বলেন। এরপর ৯টা ৩৪ মিনিটে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করেন লিয়াকত। সেখানে তাদের কথা হয় তিন মিনিট।কথোপকথনে লিয়াকত ঘটনা সম্পর্কে এসপিকে জানান। কিন্তু সেখানে মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কোনো কথা উল্লেখ করেননি। এরপর ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সাথে কথা হয় এসপির।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ঘটনাটি তদন্ত হচ্ছে। ঘটনায় এসপি’র সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসপির নাম যদি আসে আমরা দেখবো, যার নাম আসে দেখবো। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাউকেই ছাড় দিবেন না। তিনি আরো বলেন, ‘সাবেক মেজর সিনহার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে যারাই দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। তদন্তের মধ্যে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন কিংবা যারা দোষ করেছেন বলে প্রমাণিত হবে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিচার করা হবে। গত ৩১ জুলাই রাতে শামলাপুরের একটি পাহাড়ি এলাকায় শুটিং শেষে ফেরার পথে তল্লাশির সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা।
-সময় সংবাদ