জেলা আওয়ামী লীগে পদ পেতে বিতর্কিতদের তোড়জোড়
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০ , ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি
দিনের শেষে প্রতিবেদক : সম্প্রতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সকল উপ-কমিটি, জেলা, মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকে কমিটি জমা না দেয়ায় এক সপ্তাহ সময়সীমা বৃদ্ধি করে দলটি। কমিটি গঠনকে সামনে রেখে আবারো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত, বিতর্কিত এবং অনুপ্রবেশকারীরা। অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন জেলার খসড়া কমিটিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগী এবং পোড় খাওয়াদের সঠিক মূল্যায়ন না করে অভিযুক্ত ও অনুপ্রবেশকারীদের স্থান দেয়ার পায়তারা চলছে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন সম্পন্ন বেশিরভাগ কমিটির খসড়া এরই মধ্যে জমা দেয়া হয়েছে। এখনো যেসব ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটির খসড়া জমা দেয়া হয়নি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। সব কমিটি জমা হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সেগুলো যাচাই বাছাই করবেন। পরবর্তীতে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হবে। সেগুলো তিনি আবারো যাচাই বাছাইয়ের পর চূড়ান্ত অনুমোদনের নির্দেশনা দেবেন।
অভিযোগ উঠেছে, বিভিন্ন জেলা কমিটিতে বিতর্কিত, অভিযুক্ত এবং অনুপ্রবেশকারীরা পদ বাগিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকদের ম্যানেজ করে তারা পদ নেয়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় যেসব নেতা জেল জুলুম সহ্য করে রাজনীতি করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকের সঠিক মূল্যায়ন করা নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্পষ্টভাবেই আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগীদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন ও বিতর্কিতদের স্থান না দেয়ার নির্দেশনা দেন। এমনকি যদি ত্যাগীদের বাদ দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয় তাহলে সে কমিটি ভেঙে দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়।
সভাপতি মণ্ডলীর সভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যেসব জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শুধু নিজেদের পছন্দমতো লোক রাখবেন, যারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের কমিটি থেকে বাদ দেবেন তাদের কমিটি অনুমোদন করা হবে না। যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন, তাদেরও কমিটিতে মূল্যায়ন করতে হবে। যারা প্রতিদ্বন্দ্বীদের বাদ দেবেন, দরকার হলে তাদের কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করে দেব।
আসন্ন কমিটি করার ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দিয়েছে দলটি। এ প্রসঙ্গে দলের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, কমিটি করার ক্ষেত্রে আমাদের অত্যন্ত সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অবশ্যই কমিটি করার সময়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবেন এবং সতর্ক থাকবেন কমিটিতে ত্যাগী, পোড় খাওয়া নেতারা যেন পদবঞ্চিত না হয়। তারা পদবঞ্চিত হলে যিনি ওই জেলা বা বিভাগের দায়িত্বে থাকবেন তাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা চাইবো কোনো ত্যাগী নেতাকর্মীর প্রতি যেন অবহেলা করা না হয়। এখন যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের অর্থনৈতিক শক্তি, মানসিক শক্তি একটু বেশি থাকে। তাদের সঙ্গে আমাদের পোড় খাওয়া নেতারা পেরে ওঠে না। তারা ধাক্কায় পেছনে পড়ে যায়। এই কারণে আমরা সতর্ক রয়েছি। আমাদের নেত্রীও এ ব্যাপারে খুবই হার্ডলাইনে আছেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল বলেন, পরীক্ষিত, সৎ, কমিটেড, যাদের ব্যাকগ্রাউন্ড মুজিব আদর্শের, আমাদের নেত্রী শেখ শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি যাদের আস্থা আছে তারাই কমিটিতে স্থান পাবেন। যারা সমাজে নিন্দিত, দুষ্টচক্র বা যাদের কারণে দল বিব্রত হতে পারে তারা আওয়ামী লীগের কমিটিতে আসতে পারবে না বলে আমরা আশাবাদি।