আজকের দিন তারিখ ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডে বিস্ফোরণ : ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাধ্য করতে হবে

টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডে বিস্ফোরণ : ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাধ্য করতে হবে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৫, ২০২০ , ৭:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


টেংরাটিলা গ্যাসফিল্ডে বিস্ফোরণ ঘটনায় দায়ী নাইকো। এজন্য ক্ষতিপূরণ পাবে বাংলাদেশ। নাইকো দুর্নীতি মামলার রায় বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তির প্লাটফর্ম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপুটেড (ইকসিড) গত ফেব্রয়ারিতে এ রায় ঘোষণা করে। ক্ষতিপূরণের মামলার আংশিক রায় বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে। পূর্ণাঙ্গ রায় পেতে আরো দেড় বছর সময় লাগবে। শুধু গ্যাসের ক্ষতিই নয়, স্বাস্থ্য ও প্রতিবেশগত ক্ষতির আর্থিক পরিমাণও এর সঙ্গে যোগ করতে বলেছে আদালত। সব মিলিয়ে আগামী বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। করোনা ভাইরাস সংকটের মধ্যেও বড় একটি সুসংবাদ পেল বাংলাদেশ। এমন খবর নিশ্চয় কিছুটা স্বস্তি দেবে। জানা যায়, ২০০৫ সালের জানুয়ারি ও জুনে দুদফায় নাইকোর অনুসন্ধান কার্যক্রম চলাকালে ছাতকের টেংরাটিলার এ গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় ৩শ ফুট উপরে উঠে গ্যাসের আগুনের লেলিহান শিখা। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জ্বলতে থাকে আগুন। গ্যাস বের হয় পুকুর, ফসলি জমি ও বসতবাড়িতে ফাটল দিয়ে। স্থানীয় প্রাণবৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়। নাইকোর গাফিলতির কারণে এ দুর্ঘটনায় ৭৪৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে বাংলাদেশ। নাইকো তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। বাপেক্সও এই ক্ষতি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নাইকোর অন্য গ্যাসফিল্ড ফেনীর গ্যাসের বিল বাবদ পাওনা অর্থ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে নাইকো ইকসিডে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল ও ১৬ জুন দুটি মামলা করে। একটি আটক গ্যাস বিল আদায় এবং অন্যটি টেংরাটিলা বিস্ফোরণের দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে। অন্যদিকে একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রকে প্রান্তিক দেখিয়ে তৎকালীন বিএনপি সরকার কানাডিয়ান ওই কোম্পানিকে কাজ দেয়। এতে রাষ্ট্রীয় বিপুল ক্ষতি হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন-২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে নাইকোর হাতে তুলে দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগে মামলা দায়ের করে। গত ৩১ মার্চ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে কোভিডের কারণে আদালত বন্ধ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালতে ১০ বছরে রায় এলেও দেশের আদালত ১৩ বছরেও মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিই করতে পারেনি। এই মামলায় অন্যদের সঙ্গে খালেদা জিয়াও আসামি। দীর্ঘ ১০ বছর আইনি প্রক্রিয়ার পর নাইকো মামলার রায় বাংলাদেশের পক্ষে এসেছে। তবে দেউলিয়া এ কানাডিয়ান কোম্পানিটির বাংলাদেশে থাকা অর্থ ও সম্পত্তি থেকে ৩১০ মিলিয়ন ডলার পাওয়া যেতে পারে। ফলে ক্ষতিপূরণের দুই-তৃতীয়াংশ অর্থই আদায়ের বিষয়টি এক প্রকার অনিশ্চিত। তবে এই অর্থ আদায়ের জন্য জোর তৎপরতা দরকার। যেহেতু এই আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত। এই রায়ের ফলে নাইকোর প্রতি ক্ষতিপূরণ পরিশোধে বাধ্য করতে হবে।