আজকের দিন তারিখ ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
রাজনীতি নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারকে জবাব দিতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারকে জবাব দিতে হবে : মির্জা ফখরুল


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২ , ৪:৩০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি


দিনের শেষে প্রতিবেদক :  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিদ্যুত, গ্যাস, পানির দাম বৃদ্ধি করছে বারবার। কারণ একটাই শুধুমাত্র চুরির জন্য। এখানে একজন বলেছেন যে, চাল-ডাল-তেলের দাম বাড়ানোর বিরুদ্ধে আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে। অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।’ আজ মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে ‘ফসলের মাঠে কৃষকের আত্ম হত্যা : ফ্যাসীবাদী শাসনের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক এই প্রতিবাদ সভা হয়। গত ২ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মানিকচাঁদ গ্রামে শাসকগোষ্ঠির প্রভাবশালী মহল কর্তৃক সেচ পাম্প স্থাপনে বাধা প্রদানের প্রতিবাদে নিজের ফসলের মাঠে কৃষক শফিউদ্দিন আত্মহত্যা করেন।

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা সভায় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহসভাপতি গৌতম চক্রবর্তী, নাসির হায়দার, জামাল উদ্দিন খান মিলন, এসএম ফয়সাল, আনম খলিলুর রহমান, ওমর ফারুক শাফিন, সৈয়দ অলিউল্লাহ সিদ্দিকী, যুগ্ম সম্পাদক শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী, মাহবুদা হাবিবা, ইশতিয়াক আহমেদ নাসিরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন,‘সরকারকে জবাব দিতে হবে কেনো চালের দাম বাড়ল? যে চালের দাম আমাদের সরকারের আমলে ছিল সর্বোচ্চ ১৭/১৮ টাকা সেটা এখন ৬০/৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে মোটা চাল। কেনো সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ছে? যেটা আমাদের সময় ছিলো ৫৪ টাকা সেটা এখন ১৮০ টাকা। কারণটা কী? চুরি, দুর্নীতি। প্রতিক্ষেত্রে দুর্নীতি। এই যে দুর্নীতি এই দুর্নীতির সঙ্গে একেবারে রন্ধ্রে রন্ধ্রে রাষ্ট্রের সমস্তঅংশগুলোকে এরা জড়িয়ে ফেলেছে। কোনো ফাঁক নেই যেই খাতে দুর্নীতি নেই।’

মাথাপিছু মানুষের আয়বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের পরিসংখ্যানও ‘মিথ্যা’বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমনপীড়ন প্রসঙ্গে

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আরেকটা কথা পরিস্কার করে বলতে চাই, আজকে যারা জনগনকে হত্যা করছে, আজকে যারা মানুষের ওপর অত্যাচার করছে, নির্যাতন করছে যেমন কালকে সুনামগঞ্জে একজন গ্রেপ্তার করে নিয়ে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আইনরক্ষাকারী বাহিনী করেছে। এটা যদি হয়, অত্যাচারি হয়। হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কত দিন ধরে আন্দোলন করল। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি চরমভাবে গেছে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধবংস করে ফেলেছে। কোন সেক্টারটা আছে? একটা সেক্টারও নাই। গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে তারা ধবংস করে ফেলেছে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে কৃষক দলকে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

কৃষক দলের কাছে বড় ভুমিকা চাই

মির্জা ফখরুল বলেন,  ‘আমি বিশ্বাস করি, কাউকে দরকার হবে না। এক কৃষককে যদি সংগঠিত করা যায় তাহলেই আমরা এই দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে পারবো। বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস হচ্ছে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্যময় ইতিহাস। এখানে তেভাগার আন্দোলন হয়েছে, এখানে ফকির বিদ্রোহ হয়েছে, এখানে তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা দিয়ে যুদ্ধ হয়েছে। কৃষকরাই এখানে পরিবর্তন আনার ব্যাপারে অনেক ইতিবাচক ভুমিকা পালন করেছে। আজকে কৃষির কিছু মৌলিক পরিবর্তন করা দরকার। আমাদের কৃষকদলকে সেই ভুমিকা পালন করতে হবে যাতে তারা দলের ওপরে চাপ সৃষ্টি করতে পারেন যে তার দল কৃষক বান্ধব পলিসি দিতে বাধ্য হয়। যখন সরকারের আসলে তখন কৃষি বান্ধব পলিসি গ্রহণ করে। অর্থাৎ কৃষক দলকে একটা বড় রকমের ক্যাটালিস্টের ভুমিকা পালন করে। আমার আস্থা আছে এখন যে নেতৃত্ব এসেছে তারা সেটা করতে সক্ষম হবে।’

বিদায়ী সিইসি‘র মতো ব্যক্তিদের নামের তালিকাই সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আবার নির্বাচিত হবার জন্যে এখন তারা (সরকার) তাদের মতো করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এই কমিশন গঠন করার জন্য একটা সার্চ কমিটি গঠন করেছে, আইনও তৈরি করেছে। সবগুলো হচ্ছে জনগনকে বোকা বানানোর জন্য। এই সার্চ কমিটি যাদের দিয়ে করেছে সব তাদের লোক। প্রত্যেকটাই একটাও বাদ নেই। আজকে আবার নাকী সেটার নামগুলো পাঠাবে প্রেসিডেন্টের কাছে। যাদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে দেখা যাবে যে, সেই হুদার (কেএম নুরুল হুদা) মতোই লোক হবে।’

বিদায়ী সিইসির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে- কিচ্ছু নাই এটার মধ্যে। তার ট্রায়াল করতে হবে, তার বিচার করতে হবে। অনেকে তাকে বলে যে, বেহুদার মতো। নো। বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, বাংলাদেশের মানুষের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধবংস করে দেয়া-এজন্য তো তার বিচার হতে হবে। তাকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে, অবশ্যই দাঁড়াতে হবে।’