আজকের দিন তারিখ ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন জেলায় জেলায় উৎসব : প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন জেলায় জেলায় উৎসব : প্রধানমন্ত্রী


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১৬, ২০২২ , ৩:০৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক :  যে আমাদের কাছ থেকে সব থেকে বেশি সুযোগ পেয়েছে। সবথেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা যে আমার কাছ থেকে নিয়েছে তারই বেঈমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি সেদিন চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে, দিতে পারেনি। পদ্মা সেতু আমরা নির্মাণ করেছি, তাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন প্রত্যেক জেলায় জেলায় উৎসব হবে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রংপুরের পল্লী জনপদ এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চু্য়্যালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে। যে দক্ষিণ অঞ্চল সারাজীবন অবহেলিত, আর অবহেলিত থাকবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি একটা জায়গায় হয়, সেখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এমনিতেই হয়ে যায়। আমরা দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ, পদ্মা পাড়ের মানুষ সব সময় তো অবহেলিত ছিলাম। দারিদ্র আমাদের নিত্যসঙ্গী। আর সেটা থাকবে না। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করবো সবাই একটু ধৈর্য ধরে চলবেন। গাড়ি নিয়ে কেউ প্রতিযোগিতা করবেন না। কে আগে গেল পরে গেল এসব করবেন না। অর্থাৎ কোনো রকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে লক্ষ রেখে সবাই চলাচল করবেন এবং উৎসবটা পদ্মাপারই শুধু হবেনা সারা বাংলাদেশ এই উৎসবটা করবেন। আমি চাচ্ছি পুরো বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলায় জেলায় উৎসব হোক, কারণ এটা আমাদের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল।

তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী আমাজান এবং তারপর হচ্ছে পদ্মা। এই পদ্মায় এখানে একটা সেতু করতে পারি সেটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। তার উপর এই সেতুটা হচ্ছে দ্বিতল সেতু। নিচ দিয়ে ট্রেন যাবে উপর দিয়ে গাড়ি যাবে, এটা একটা কঠিন কাজ। পৃথিবীতে এই ধরনের কাজ বোধহয় এটাই প্রথম। এখানে যে সমস্ত মেশিনারজ ব্যবহার করা হয় এটা বোধহয় আর কোথাও হয়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর যে কথাটা ছিল সেটাও আপনারা জানেন। এই সেতু করতে যেয়ে আমাদের ওপর মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। যেটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে ছিলাম। আমরা এখানে দুর্নীতি করতে বসিনি, নিজেদের ভাগ্য করতে বসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি। সেখানে আমাদের দেশেরই একজন যে আমাদের কাছ থেকে সব থেকে বেশি সুযোগ পেয়েছে, সবথেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা যে আমার কাছ থেকে নিয়েছে তার বেঈমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকাটা বন্ধ হয়ে যায়। একজন ব্যক্তির একটা ব্যাংকের এমডি পদ, একটা ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ। আমাদের তো এখন প্রায় ৫২, ৫৩টি ব্যাংক আছে প্রত্যেক ব্যাংকের একজন ম্যানেজিং ডিরেক্টর আছে। কতজন পারে বিদেশের টাকা বানাতে? অথবা কাউকে লক্ষ লক্ষ ডলার ডোনেশন দিতে? বা বিদেশে ঘুরে বেড়াতে কে পারে? দুর্ভাগ্য হল সব থেকে বেশি আমি তাকে সুযোগ দিয়েছি। গ্রামীণ ব্যাংক এই ব্যবসাটা আমার আমলে আমি তাকে দিয়েছিলাম। তাকে অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। গ্রামীণ ব্যাংক একেবারেই বসে যাচ্ছিল, তখন সেই গ্রামীণ ব্যাংক চালু রাখার জন্য ৯৭, ৯৮ সালে আমাদের জন্য খুব খারাপ সময় ছিল। কারণ বিশাল বন্যা ছিল সেই অবস্থায়ও আমাদের রিজার্ভ খুব কম ছিল অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল, একদিকে অর্থনৈতিক মন্দা অন্যদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সে অবস্থায়ও ব্যাংকটাকে চালু রাখতে পারে প্রথমে ১০০ কোটি পরে ২০০ কোটি পরে আরও ১০০ কোটি মোট ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যবসা চালু রাখার সুযোগ করে দিই। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবসাটা দেই যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের লভ্যাংশটা গ্রামীণ ব্যাংকে যায়। জীবনে একটা পয়সাও দেয় নাই। শ্রমিকদের পাওনা টাকা দেয় না আর কি দেবে? সেটা হচ্ছে আমাদের দেশের নবেল লরিয়েট ডক্টর ইউনুস। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়বেন না। যদিও আইন আছে ৬০ বছর তার তখন ৭০ বছর পার হয়ে গেছে। ১০ বছর তিনি বেআইনিভাবে এমডি থেকেছেন। তারপর আরও থাকবেন। তাকে আমাদের তরফ থেকে বলা হয়েছে আপনি উপদেষ্টা থাকেন, আপনাকে সেই সম্মান দিয়ে রাখা হবে। সেটাও তিনি মানেন নাই। সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন আর মামলায় যথাযথভাবে হেরও গিয়েছিলেন‌। কোর্ট আর যাই পারুক তার বয়স তো দশ বছর কমাতে পারে নাই। যদি কমাতে পারতো হয়তো করে দিত এটাও জানি।

মামলায় হেরেও গিয়েছিল তিনি। পরে তদবির করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে দিয়ে হিলারি ক্লিনটন তার বন্ধু ছিল সে তখন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে ইউনুস মোটা অংকের চাঁদাও দিয়েছিলেন অনুদান দিয়েছেন। জানিনা এত টাকা তিনি কোথায় পেল সেটাও দিয়েছিল। কাজেই আমেরিকার সরকারদের ধরে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমার পদ্মার টাকা বন্ধ করে দেয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দেয় কানাডার কোর্টে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে ছিলাম ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে কে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে। আমি এমনিতে মেনে নেব না, প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে পারে নাই। তখন আমি বলেছিলাম টাকা লাগবে না আমরা নিজের টাকায় করব।

দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীকে ধন্যবাদ আমি যখন ঘোষণা দিয়েছিলাম আমার টাকায় করব দেশের সাধারণ মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তারা বলেছিল আমাদের যার যা আছে আমরা দেবো নিজের টাকায় করব। অনেকে আমাকে চেক ও পাঠিয়েছে। মানুষের যে অভূতপূর্ব সাড়া এটাই আমার সাহস যুগিয়েছিল। এটাই আমার শক্তি যুগিয়েছিল। কারণ মানুষের শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি। পদ্মা সেতু আমরা আমাদের সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করতে পেরেছি। এত বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করে। এই পদ্মা সেতু নিয়ে কত কথা কত অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কানাডা কোর্ট রায় দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যেসব অভিযোগ এনেছে সব ভুয়া মিথ্যা দুর্নীতির কোনো অভিযোগই এখানে টেকে নাই। আমাদের পক্ষে রায় পেয়ে গেছিলাম। এরকম বাধার সম্মুখীন হয়েও এই পদ্মা সেতু আমরা নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। ‌