আজকের দিন তারিখ ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পিটিআইয়ের রিপোর্ট : যুবতী আকস্মিকভাবে জানলেন তিনি আসলে পুরুষ

পিটিআইয়ের রিপোর্ট : যুবতী আকস্মিকভাবে জানলেন তিনি আসলে পুরুষ


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৭, ২০২০ , ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা


দিনের শেষে ডেস্ক : তিরিশ বছর বয়সী এক যুবতী। আকস্মিকভাবে তিনি জানতে পারলেন যে, তিনি নারী নন। তিনি একজন পুরুষ। কলকাতার একটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে পুরুষ বলে ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে চারদিকে শোরগোল। খবর জানাজানি হতেই লোকজনের ভিড় জমতে থাকে ওই হাসপাতালে। এ খবর দিয়েছে ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা পিটিআই।
এতে বলা হয়েছে, ৩০ বছর বয়সী ওই যুবতী কোনো জটিলতা ছাড়াই স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। তবে সম্প্রতি তার পেটে বেদনা হতে থাকে। তিনি হাসপাতালে যান। চিকিৎসকরা তার পরীক্ষা করেন। দেখটে পান তিনি পুরুষের টেস্টিকিউলার ক্যান্সার বা অন্ডকোষের ক্যান্সারে ভুগছেন। তার শারীরিক গঠন নারীদের মতো হলেও তিনি নারী নন। এমন বিরল ঘটনা ২২,০০০ মানুষের মধ্যে একটি পাওয়া যেতে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ওই যুবতীর ছোটবোনের বয়স ২৮ বছর। বড়বোনের এমন সমস্যা ধরা পড়ার পর ছোটবোনের পরীক্ষা করানো হয়। বিস্ময় সেখানেও। তার ভিতর পাওয়া যায় ‘এন্ড্রোজেন ইনসেনসিটিভিটি সিনড্রোম’। জেনেটিক্যালি এ লক্ষণটি দেখা যায় একজন পুরুষের ক্ষেত্রে, যার শারীরিক গঠন মেয়েদের মতো।
৩০ বছর বয়সী বড়বোন বিবাহিতা। তার বসতি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে। ৯ বছর আগে তার বিয়ে হয়েছে। কয়েক মাস আগে তিনি তলপেটে অসহনীয় ব্যথা নিয়ে যান কলকাতায় নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস ক্যান্সার হাসপাতালে। সেখানে তার মেডিকেল পরীক্ষা করেন ড. অনুপম দত্ত ও ড. সৌমেন দাস। তাকে চিকিৎসা দেয়াকালে তারা ওই যুবতীর আসল পরিচয় শনাক্ত করেন। ড. দত্ত বলেন, অবয়বে তিনি একজন নারী। তার কণ্ঠ, বক্ষদেশ, শারীরিক অন্যান্য গঠন- সবই নারীর। তবে জন্মের সময় থেকেই তার শরীরে জরায়ু এবং ডিম্বাশয় অনুপস্থিত। কখনো তার ঋতুস্রব হয় নি।
ড. দত্ত বলেন, তিনি পেটে ব্যথার অভিযোগ করার পর আমরা তার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করি। এতে আমরা দেখতে পাই তার শরীরের ভিতরে অবস্থান করছে টেস্টিকলস বা অন্ডকোষ। বায়োপসি করা হয়। তাতে দেখা যায় তার টেস্টিকলে ক্যান্সার হয়েছে, যা সেমিনোমা নামে পরিচিত। বর্তমানে তিনি কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা স্থিতিশীল। যেহেতু এই অন্ডকোষ তার শরীরের ভিতরে এবং এর পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটেনি, তাই সেখান থেকে কোনো টেস্টোস্টেরন বা শুক্র নিঃসরণ হয়নি। অন্যদিকে তার শরীরে যে নারীঘটিত হরমোন আছে, তাই তাকে নারীর অবয়ব দিয়েছে।
এ বিষয়ে এখন প্রতিক্রিয়া কি? এর জবাবে তিনি বলেছেন, ওই ব্যক্তি বড় হয়েছেন একজন নারী হিসেবে। প্রায় এক দশক আগে একজন পুরুষের সঙ্গে তিনি বিবাহিত জীবন যাপন করছেন। এখন আমরা তাকে ও তার স্বামীকে কাউন্সেলিং করছি। তাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি আগের মতো জীবন চালিয়ে নিতে। এর আগে অনেকবার তারা সন্তান নেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। ওই যুবতীর দুই খালারপরীক্ষা করা হয়েছে এর আগে। তাতেও এন্ড্রোজেন ইনসেনসিটিভিটি সিনড্রোম ধরা পড়েছে। ড. দত্ত বলেন, সম্ভবত বিষয়টি জিনঘটিত।