আজকের দিন তারিখ ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস বাফুফের সাধারণ সম্পাদক সোহাগকে নিষিদ্ধ করলো ফিফা

বাফুফের সাধারণ সম্পাদক সোহাগকে নিষিদ্ধ করলো ফিফা


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১৫, ২০২৩ , ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস


দিনের শেষে ডেস্ক : ফিফা ফান্ড নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও অনিয়ম করায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)-এর সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছরের জন্য সব ধরনের ফুটবল কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। এছাড়া ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে। আজ (শুক্রবার) ফিফার ওয়েবসাইটে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা ও জরিমানার কথা জানানো হয়। ইতিমধ্যে শাস্তির বিষয়টি জানিয়ে আবু নাঈমকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ফিফা। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনকেও (এএফসি)।

ফিফার ক্রয়নীতি বলছে, যেকোনো কিছু কিনতে হলে নিতে হবে অন্তত তিনটি দরপত্র। এরপর সর্বনিম্ন দরদাতা কাজের দায়িত্ব পাবে। বাফুফেও সেটাই করেছে। কিন্তু ক্রয় রশিদসহ বাকি দুই কোটেশনে গরমিল পায় ফিফার অডিট কমিটি। ফিফার স্বাধীন নৈতিকতা বিষয়ক কমিটির অ্যাজুডিকেটরি চেম্বারের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রযোজ্য কার্যধারায় তদন্তকারী চেম্বার দ্বারা পরিচালিত তদন্তের সময় সংগৃহীত সাক্ষ্যপ্রমাণের পাশাপাশি শুনানি ও উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ যত্ন সহকারে বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যাজুডিকেটরি চেম্বার নিশ্চিত হয়েছে যে, সোহাগ ২০২০ সালের ফিফা এথিকস কোডের ধারা ১৫ (সাধারণ কর্তব্য), ১৩ (আনুগত্যের দায়িত্ব) ও ২৪ (জালিয়াতি ও মিথ্যাচার) লঙ্ঘন করেছেন। যে কারণে তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ফিফা।

আজ থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে সোহাগের।

নিয়ম অনুযায়ী ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় যোগ্যতা হারাবেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকারও। ফিফার বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ফিফা নীতিমালার তিনটি ধারায় অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে সোহাগের বিরুদ্ধে। দায়িত্বে অবহেলা, প্রতারণার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
আর্থিক অনিয়মের দাঁয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে ফিফার কাছ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছিলেন সোহাগ ও বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন। সেই নোটিশের জবাব দিতেই কম্পিটিশন ম্যানেজার জাবের বিন তাহের আনসারি ও গ্রাসরুট ম্যানেজার হাসান মাহমুদকে সঙ্গে নিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে ফিফার সদও দপ্তরে (জুরিখ) গিয়েছিলেন সোহাগ। তবে সশরীরে হাজির হয়েও যে ফিফাকে সন্তুষ্টি করতে পারেননি সোহাগ সেটা বোঝা গেল আজ ফিফার বিবৃতি থেকেই।

সাধারণ সম্পাদকের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। তবে সোহাগ আপিল করতে চাইলে তাঁকে সহযোগিতার করবেন এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিফা নিষেধাজ্ঞা দিলে সেটা নিষেধাজ্ঞাই থাকবে। এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবে সোহাগ চাইলে আপিল করতে পারে। দেখা যাক কী হয়!’

গত কিছুদিন থেকেই নিজের কর্মকাণ্ডে বেশ সমালোচিত ছিলেন আবু নাঈম সোহাগ। আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে নারী ফুটবলারদের মিয়ানমারে খেলতে না পাঠানোর পেছনে অন্যতম কুশীলব ছিলেন তিনি। নারীদের খেলতে না পাঠানোয় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের তোপের মুখে পড়েছিলেন সোহাগ। সংসদীয় কমিটি তাঁর পদত্যাগও চেয়েছিল। এবার পরলেন নিষেধাজ্ঞার খপ্পরে।

২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। পরবর্তী বছর (২০০৯) থেকে পেশাদার সাধারণ সম্পাদক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে সংস্থাটি। আল মুসাব্বির সাদী পামেলের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আবু নাঈম সোহাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কয়েক বছর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে পরিচালনার পর ২০১৩ সাল থেকে তিনি সাধারণ সম্পাদকের পূর্ণ দায়িত্ব পান। বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক হলেও সোহাগ ফেডারেশনের নীতি নির্ধারণ, বাস্তবায়নসহ সকল কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন। অনেকে ক্ষেত্রে বাফুফের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাধর ছিলেন নিষেধাজ্ঞার কবলে পরা বাফুফের এই কর্মকর্তা।