বিদেশ ফেরত কর্মীদের সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৮, ২০২১ , ২:৩১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে ডেস্ক : বিশ্বে চলমান করোনা সংক্রমণের কারণে অনেক প্রবাসী কর্মী চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরেছেন প্রায় ৫ লাখ কর্মী। তারা যাতে দেশে দ্রুত কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে সেই জন্য সরকার সহায়তা করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৮ জুলাই) এই সংক্রান্ত একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, বিদেশ ফেরত ৫ লাখ কর্মীদের মধ্যে ২ লাখ কর্মীকে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিদেশ ফেরত কর্মীদের নগদ সহায়তার পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে নতুন নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বিদেশ ফেরত কর্মীরা যাতে উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হতে পারেন তার জন্য বাংকের সঙ্গে সংযোগ করানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরে করোনা শুরু হলেও বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী ফেরত আসা শুরু হয় মূলত গত বছরের এপ্রিল থেকে। ওই বছর মোট চার লাখ ৭৯ হাজার শ্রমিক ফেরত আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। সবচেয়ে বেশি আসে সৌদি আরব, আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য থেকে। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আরও ৪১ হাজার প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। এসব প্রবাসীর মধ্যে ২০২০ সালে ফেরত আসা দুই লাখ প্রবাসী শ্রমিক প্রকল্পের আওতায় সুযোগ-সুবিধা পাবেন। দেশের ৩২টি নির্দিষ্ট জেলার প্রবাসী শ্রমিকরাই এতে বিবেচিত হচ্ছেন।
প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। জানতে চাইলে কমিশনের সংশ্নিষ্ট শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য সরকারের সচিব শরিফা খান বলেন, প্রকল্পটির মাধ্যমে ফেরত আসা অসহায় প্রবাসী শ্রমিকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার প্রচেষ্টা আছে। প্রকল্পে কেবল ২০২০ সালে ফেরত আসা প্রবাসী শ্রমিকদেরই সেবা দেওয়া হবে। পরে এ ধরনের আরও উদ্যোগের মাধ্যমে বাকিদেরও সুবিধার আওতায় আনার কথা আছে। আপাতত দেশের ৩২টি জেলার ফেরত প্রবাসীরা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। জেলা নির্বাচনের ভিত্তি জানতে চাইলে সচিব বলেন, প্রবাসী শ্রমিক অধ্যুষিত জেলাগুলোকেই প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে আর্থিক এবং কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে। প্রকল্পটির উদ্যোগ নিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়ন করবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। ২০২৩ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকা। মোট ব্যয়ের ৪২৫ কোটি টাকাই দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। আজ বুধবার এই বৈঠক হওয়ার কথা। এতে সভাপতিত্ব করবেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রকল্পের আওতায় দুই লাখ ফেরত শ্রমিককে কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে নগদ অর্থ হিসেবে প্রত্যেককে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে। ফেরত শ্রমিকদের মধ্যে দক্ষ ২৩ হাজার ৫০০ কর্মী বাছাই করে সরকারের বিভিন্ন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের সনদের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে দেশে-বিদেশে চাকরিতে তারা বিশেষ সুবিধা পায়। এ ছাড়া আর্থিক, কারিগরি ও অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও ঋণ সুবিধা পাওয়াসহ সব ধরনের সেবা সহজ করা হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন উৎপাদনশীল কার্যক্রম ও ছোট ব্যবসার উদ্যোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও আর্থিক ও পরামর্শ সুবিধা দেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় থাকা জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, জামালপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লা, সিলেট ও সুনামগঞ্জ।