মুখ ফেরালো তিন হাসপাতাল, প্রাণ গেল যুবকের
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ২৯, ২০২০ , ৩:৪৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
নওগাঁর রাণীনগরে করোনা সন্দেহে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হওয়া যুবক আল আমিন (২২) মারা গেছেন। শনিবার (২৮ মার্চ) রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। আল আমিন মেনিনজাইটিস রোগে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। নিহত যুবকের বাড়ি রাণীনগর উপজেলার অলঙ্কারদীঘি গ্রামে। তিনি কৃষক মকলেছুর রহমানের ছেলে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ করোনা ভাইরাস সন্দেহে তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন আল আমিন।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নারায়নগঞ্জে একটি কাপড়ের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন আল-আমিন। গত কয়েক দিন আগে জ্বর আর কাশি নিয়ে অসুস্থ ছিলেন। শনিবার সকালে অসুস্থ অবস্থায় নারায়নগঞ্জ থেকে রাণীনগরে আসেন। এ সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রামের কিছু লোক তাকে গ্রামে প্রবেশ করতে দেননি। চিকিৎসার জন্য তাকে নওগাঁ সদর ও আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানেও চিকিৎসকরা চিকিৎসা না করে ফিরিয়ে দেন। এরপর আবারও তাকে নিয়ে আসা হয় ভেটি কমিউনিটি ক্লিনিকে।
পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু মন্ডল বিষয়টি জানতে পেরে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় যুবক আল আমিনকে চিকিৎসার জন্য রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তার অবস্থা বেগতিক দেখে চিকিৎসকরা তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠান। অবশেষে তিন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নিহতের বাবা মকলেছুর রহমানের জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই কিছু ওষুধ ও ইনজেকশন লিখে দেন চিকিৎসকরা। এরপরও ছেলের শরীরের জ্বর কোনো ভাবেই কমছিলো না। কোনো চিকিৎসক আমার ছেলের আশে পাশে আসেনি। সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে অতিরিক্ত জ্বরে আমার ছেলে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা গেছে।
রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এইচ এম ইফতেখারুল আলম খাঁন বলেন, তার শরীরে প্রচন্ড জ্বর ছিলো। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুন বলেন, ওই যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তিনি মেনিনজাইটিস রোগে মারা গেছেন। তার মৃত্যু সনদে চিকিৎসক তা নিশ্চিত করে দিয়েছেন। তবে একটা বিষয় নিশ্চিত না হয়ে ছেলেটাকে গ্রামে উঠতে না দেয়াটা অমানবিক কাজ।