Warning: file_put_contents(/data/wwwroot/dinersheshey.com/wp-content/plugins/covid-19-bangladesh-live/data/districts.json): failed to open stream: Permission denied in /data/wwwroot/dinersheshey.com/wp-content/plugins/covid-19-bangladesh-live/covid-19-bd-live.php on line 103
মৃত্যু আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা - Diner Sheshey মৃত্যু আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা - Diner Sheshey
Notice: Trying to access array offset on value of type null in /data/wwwroot/dinersheshey.com/wp-content/themes/dinersheshey/panel/sit_style.php on line 124
আজকের দিন তারিখ ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় মৃত্যু আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা

মৃত্যু আতঙ্কে প্রবাসী বাংলাদেশিরা


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৬, ২০২০ , ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়


দিনের শেষে প্রতিবেদক : ঢাকার তাঁতিবাজারের সাধনা সরকার একটু সুখের আশায় চলে গিয়েছিলেন নিউইয়র্কে। ভালোই চলছিল সবকিছু। কিন্তু করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে সব তছনছ হয়ে গেছে তার। জ্যামাইকা হাসপাতালে ছিলেন ১০ দিন ভেন্টিলেটরে। সেটা খুলে দেয়ার ৬ ঘণ্টার মাথায় তিনি মারা যান। তার লাশ মেয়ে ও মেয়ে জামাই দেখতেও পাননি। প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী প্রয়াত সুবীর নন্দীর শ্যালিকা কবিতা শ্যাম চৌধুরী চন্দ্রা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার লাশ এখনো হাসপাতালেই পড়ে আছে। শেষকৃত্যের জন্য সিডিউল পাওয়া গেছে আগামী ১৫ দিন পর। সুবীর নন্দীর আরেক ভাই করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ সময় সকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে মারা গেছেন বড়লেখার সাবেক সাংসদ সিরাজুল ইসলাম। করোনায় সারি সারি লাশ আর মৃত্যুর মিছিল থামিয়ে দিয়েছে নিউইয়র্ক, লন্ডন, রোম, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্য। চারদিকে ঘোর অন্ধকার, শুধুই দীর্ঘশ^াস। প্রতি ক্ষণে মৃত্যু আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের। মৃত্যুর পর পরিবার-পরিজনরাও দেখতে পারছেন না প্রিয় স্বজনকে। এ পর্যন্ত শুধু নিউইয়র্কের বাঙালি কমিউনিটিতে ৬৭ জনের মৃত্যুর পর সেখানে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। লন্ডনে এ পর্যন্ত ২৪ জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি মারা গেছেন। মৃত্যু আতঙ্ক এতই বেশি সেখানে যে ভেন্টিলেটর কারা পাবে আর কারা পাবে না সেটাও নির্ধারিত হয়ে আছে। বিশেষ করে বয়স্কদের আতঙ্ক একটু বেশি, কারণ তারা জানেন অসুস্থ হওয়া মানেই মৃত্যু। আর প্রতিদিনই মৃত্যু বেড়ে চলছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশির মধ্যে কতজন আক্রান্ত তার সঠিক তথ্য নেই। তবে বহুজন আইসিইউতে রয়েছেন। করোনার থাবায় একে একে পরিচিত মুখগুলো ছবি হয়ে যাওয়ায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ছেন প্রবাসীরা। স্বজন-পরিচিতজনদের মৃত্যু সংবাদ শুনে অসহায়ের মতো ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে তাদের। প্রিয় মানুষকে শেষ বিদায়ও জানাতে পারছেন না তারা। মৃত্যুর মিছিল এতই বড়, শেষকৃত্যের জন্য ১৫ দিনের আগে কোনো শিডিউল মিলছে না। কবরস্থানের জায়গা পেলেও লাশ দাফনের আনুষঙ্গিক খরচ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন শ্রমজীবী পরিবারগুলো। এই আকস্মিক খরচ সামাল দিতে পারছেন না অনেক পরিবার। অবশ্য কিছু সংগঠন ও ব্যক্তিগতভাবে অনেক আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। নিউইয়র্কে বাস করা কলম্বিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের বাংলা ভাষার প্রভাষক ও সমাজকর্মী দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য বলেন, নিউইয়র্কের কুইন্স-জ্যামাইকা, জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কসের বাঙালি কমিউিনিটিতে এ পর্যন্ত ৬৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, চাইলেও কোনো স্বজন রোগীর খবর জানতে পারছে না। এমনকি মারা যাওয়ার পর লাশটাও দেখতে পারছে না তারা। প্রবাসীদের আতঙ্কের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এলিভেটরহীন পুরনো তিন-চার তলা অ্যাপার্টমেন্ট/ফ্ল্যাট-বিল্ডিংগুলোতে বহু পরিবারের বাস। সেগুলোতে মানুষ দরজার ভেতর দিকটা ডাক্টটেইপ দিয়ে সিল করে দিয়েছে, যাতে বাতাস ঢুকতে না পারে। মাঝে মাঝে রাস্তামুখী জানালা খুলে ঘরে অক্সিজেন সংগ্রহ করছে। এমনটি করার কারণ ব্যাখা করে তিনি বলেন, দরজার ঠিক পাশ দিয়ে যে সিঁড়িটা নিচে নেমে গেছে সেটা দিয়েই তো মানুষ ওঠানামা করে। যারা এই সিঁিড় ব্যবহার করছে তাদের অনেকেই রোগাক্রান্ত। এটা না করলে ওদের হাঁচি-কাশি দরজার ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢুকবে। নিউইয়র্ক প্রবাসী তাপস গায়েন ফেসবুকে লিখেছেন, রাতের গভীরে নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে রয়েছে সাবওয়ে রেল, যেন মৃত এই নগরীকে নিয়ে যাবে শেষকৃত্যে। নিউইয়র্কের মতো মহানগরে করোনায় কীভাবে বাঙালিরা কুপোকাত হলেন জানতে চাইলে প্রবাসী সাংবাদিক সীতাংশু গুহ বলেন, বাঙালিরা নিউইয়র্কে এলেও তাদের জীবনযাত্রার প্রণালি পরিবর্তন হয়নি। খরচ বাঁচাতে বহু মানুষ একসঙ্গে বসবাস করছেন। এছাড়া যেদিন লকডাউন করল সেদিন সবাই একসঙ্গে বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। এতে ভিড় হয়েছে এবং ভিড়ের মধ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। সব মিলিয়ে সচেতনতার অভাবে বাঙালি কমিউনিটিতে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। নিউইয়র্কের বিভিন্ন শহরে করোনায় মৃত্যুহার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানিদের চেয়ে সেখানে বাংলাদেশিদের মৃত্যুহার বেশি। কারণ আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বহু বাঙালি গাদাগাদি করে থাকে। এছাড়া নিউইয়র্ক শহরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ট্যাক্সি ও উবার চালকই বাঙালি। বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় বিপুলসংখ্যক বাঙালি কাজ করে। এতে তারা ভিড়ের মধ্যেই থাকে। মূলত এই কয়েকটি কারণেই করোনা ছড়িয়েছে বাঙালি কমিউনিটিতে। নিউইয়র্কের মতো ব্রিটেনের বাঙালি কমিউনিটিতেও করোনা বেশ ভালোভাবেই সংক্রমিত হয়েছে। জানতে চাইলে ইউ?কে বাংলা প্রেস ক্লা?বের সাধারণ সম্পাদক ম?ুন?জের আহমদ চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত ব্রিটে?নে ২৪ জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি মার?া গে?ছেন। ইস্ট সাসেক্সের ক্যাবচালক মাধব দে ভোরের কাগজকে বলেন, করোনার কারণে বাংলাদেশিদের মধ্যে মৃত্যু আতঙ্কের পাশাপাশি চাকরি যাওয়ার ভয়ও কাজ করছে। লকডাউনে গৃহবন্দি থেকে এরই মধ্যে বহুজন চাকরি হারিয়েছেন। এছাড়া চিকিৎসা সংকটও রয়েছে। এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অভিবাসীদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণার দাবি জানিয়েছে রিফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) নামের একটি সংগঠন। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেছেন, অভিবাসীরা আশা করছেন অভিবাসনের দেশগুলোতে করোনা ভাইরাসে যারা মারা গেছেন তাদের অবদান তুলে ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক পালন করবে।


Notice: Trying to access array offset on value of type null in /data/wwwroot/dinersheshey.com/wp-content/themes/dinersheshey/panel/sit_style.php on line 130