মেট্রোরেল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ: প্রধানমন্ত্রী
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ২৮, ২০২২ , ৫:৪৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে প্রতিবেদক : মেট্রোরেল বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক যুক্ত হলো মন্তব্য করে এটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি পালক আজ বাংলাদেশে সংযোজিত করতে পারলাম। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। কিছুক্ষণ আগেই সেটা উদ্বোধন করতে পেরেছি। সেটা হচ্ছে মেট্রোরেল। তিনি এই মাহেন্দ্রেক্ষণে জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের শহীদদের স্মরণ করেন।
মেট্রোরেল শুরুর সময়ে হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ওই ঘটনার পর কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিলো। হলি আর্টিজানে জাপানের ৮জন সেখানে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতা করার কারণে আবার মেট্রোরেলের কাজ শুরু হয়। সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেট্রোরেলে নামফলক তাদের নামে রাখবো। এছাড়া স্মৃতিস্মারক করেছি যাতে তাদের নাম থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের মাথা উচু হয়েছে। মেট্রোরেলের মাধ্যমে আরেকটি অর্জনের পালে আরেকটি পালক যুক্ত করতে পারলাম।
মেট্রোরেল চারটি মাইলফলক স্পর্শ করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এক. মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দুই. এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বৈদ্যুতিক রেল যুগে প্রবেশ করলো। তিন. মেট্রোরেল দূর নিয়ন্ত্রণ হবে। অর্থাৎ রিমোর্ট কন্ট্রোলে নিয়ন্ত্রণ হবে। এটি আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেছি সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপ। চার. মেট্রোরেলে মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেনের যুগে প্রবেশ করলো।
রাজধানীর যানজট নিরসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৬টি মেট্রোরেল করার পরিকল্পনা নিয়েছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। এটি হলে যানজট যেমন কমবে, তেমনি অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে। মেট্রোরেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও বয়ষ্ক মানুষ যাতে সহজে চলাচল করতে পারে সেই সুবিধা রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মহিলা যাত্রীদের জন্য আলাদা কোচ, বাথরুম থাকবে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো ফিস লাগবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, এই আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা যখন চালু হবে এবং নিরাপত্তার সাথে যারা সম্পৃক্ত থাকবে এতে নতুন কর্মসংস্থান হবে। এতে নতুন ১২ হাজার প্রকৌশলী চাকরি হবে যাতে শুধু কর্মসংস্থান নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। এক সময়ে আমরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বিদেশ নির্ভরতা থাকবে না।তিনি বলেন, মেট্রোরেল পরিবেশবান্ধব। কারণ এটি বিদ্যুৎ চালিত। এ সময় দুর্ভোগ সহ্য করে সহযোগিতা করার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
মেট্রোরেল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব জনগণের। বিশ্বের সবচেয়ে সর্বশেষ প্রযুক্তির জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে এতে। এসব ব্যবহারে যত্নবান হতে হবে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবহারে অনুরোধ। ধন্যবাদ জানাবো যদি মেনে চলেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, যেকোনো কাজ করতে গেলে পরিকল্পনা ও সাহসের প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য এই অল্প সময়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
দেশ উন্নয়নে সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা নিয়েছি। এখানেই থেমে থাকিনি, এই ব-দ্বীয় একশ বছর পর কেমন হবে সেই পরিকল্পনাও করেছি।
দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ মাথাপিছু আয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনার কারণে প্রবৃদ্ধি পিছিয়ে গেছে ঠিক, তবুও এখনো দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমরা অগ্রগামী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সেই দল, যে দলকে নিয়ে এদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা হয়, এটা প্রমাণিত।
বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাবে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গড়ে তুলবো জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার, উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।