আজকের দিন তারিখ ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৮, ২০২১ , ২:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: যুক্তরাষ্ট্র


দিনের শেষে ডেস্ক : ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু বৃটেনে একই ঘটনা ঘটছে খুব কম। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজ্যে এখন করোনা সংক্রমণ রেকর্ড পর্যায়ে। মিডিয়ায় একে বলা হচ্ছে ডেল্টা বিপর্যয়। বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্য, টিকা দেয়ার হার কম এবং উচ্চ মাত্রার এই ভ্যারিয়েন্টের জন্য এমনটা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রে এ কথা বলা হচ্ছে। অন্য স্থানের চেয়ে আলাবামা, আরকানসাস, লুইজিয়ানা এবং ফ্লোরিডায় ১৮ বছরের নিচে অনেক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিশুদের প্রদাহ বিষয়ক বহুমাত্রিক লক্ষণের (পিআইএমএস) মধ্যে রিস্ক ফ্যাক্টর হলো মুটিয়ে যাওয়া ও রক্তে উচ্চ মাত্রায় চিনির উপস্থিতি। এসব নিয়ে বৃটেনের অনলাইন ডেইলি মেইল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, যাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তার বেশির ভাগই টিকা নেয়নি। পক্ষান্তরে বৃটেনে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে শতকরা ৭৫ ভাগ মানুষ টিকার দুটি ডোজই নিয়েছেন। ফলে এই সংখ্যা এখন কমে আসছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। বিশেষ করে কিছু রাজ্যে, যেখানে করোনা সংক্রমণ উচ্চ মাত্রায়। এ জন্য ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, বিধিনিষেধ শিথিল, টিকা না নেয়াসহ বিভিন্ন উপাদানকে দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগের বিষয় হলো আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদেরকে এর আগের করোনার ঢেউয়ে যে পরিমাণে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল, এবার তার চেয়ে বেশি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। লিটল রক এবং স্প্রিংডেলে আরকানসাস চিলড্রেনস হাসপাতালে একদিনে ২৪টি শিশু ভর্তি হয়েছে। আগের সর্বোচ্চ সংক্রমণের সময়ের চেয়ে এই সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ বেশি। হাসপাতালের প্রধান ক্লিনিক্যাল অফিসার বলেছেন, সাতটি শিশু তাদের কাছে আইসিইউতে আছে। দু’জনকে রাখা হয়েছে ভেন্টিলেটরসে। তিনি আরো বলেছেন, বাচ্চাদের জন্য এটাই আমরা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিসেবে দেখছি। জুলাই মাসের শেষের দিকে লুইজিয়ানার ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ ১৮ বছরের নিচে করোনায় আক্রান্ত শিশুর সর্বোচ্চ সাপ্তাহিক সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এই সংখ্যা ৪২৩২। ১৫ই জুলাই থেকে ২১ শে জুলাই পর্যন্ত লুইজিয়ানার উত্তর-পূর্বে ৫ বছরের কম বয়স এমন আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড করা হয় ৬৬। আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ২৭। অন্যদিকে ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, ১২ বছরের কম বয়সী এমন শিশুদের কমপক্ষে ১০ হাজার ৭৮৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। ১২ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে বয়স এমন শিশু আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৪৮ জন। ২৩ শে জুলাই থেকে ৩০ শে জুলাই পর্যন্ত করোনায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২৪ জন। এসব শিশুর বেশির ভাগই নিউমোনিয়ায় ভুগছে অথবা প্রদাহজনিত বহুমাত্রিক লক্ষণ (পিআইএমএস) দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাস মহামারি শুরু থেকেই বলা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে শিশুরা। ধারণা করা হয়, শিশুদের বেশির ভাগ আক্রান্ত হলে তার লক্ষণ প্রকাশ পায় না। এ কারণে শিশু বা টিনেজারদের মধ্যে দ্রুততার সঙ্গে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু গত সপ্তাহে কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকরা বলেছেন, বৃটিশ বেশির ভাগ শিশু বা টিনেজারের মধ্যে করোনার লক্ষণ দেখা দিলে তা এক সপ্তাহের মধ্যে বিলিন হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন শতকরা মাত্র ০.৫ ভাগ ক্ষেত্রে পিআইএমএস লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এর কারণ, পুরোপুরি জানা যায়নি। অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে। এক্ষেত্রে রক্তপ্রবাহে প্রদাহ দেখা দিয়ে থাকতে পারে। এসব সমস্যা চিকিৎসাযোগ্য। তবে বিষয়টিকে জরুরি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু প্রাণঘাতী বলে মনে করা যাবে না। জটিল ক্ষেত্রে যেসব শিশু আক্রান্ত হওয়ার পর মারাত্মক অবস্থায় পড়েনি, তারা চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে পিআইএমএসের আঘাতে পড়তে পারে।