রাশিয়ার হামলার একমাস: বিপর্যস্ত ও দিশেহারা ইউক্রেন
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ২৪, ২০২২ , ৪:৫৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব
দিনের শেষে ডেস্ক : টানা একমাস ধরে ইউক্রেনে অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ছয়টার দিকে দেশটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এক মাসে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভসহ বেশ কয়েকটি শহর দখলে নিয়েছে রুশ সেনারা। আরও দখলে নিয়েছে দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও। বুধবার চেরনোবিল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি পরীক্ষাগার ধ্বংস করেছে তারা।
এ পরিস্থিতিতে রুশ সেনারা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, রুশ সেনারা ইতোমধ্যেই বিশৃঙ্খল হয়ে উঠেছে। তাদের নেতৃত্বে কে রয়েছেন সেটি এখনও বলা যাচ্ছে না। রুশ সেনাদের প্রতিটি ইউনিট এখন পারস্পরিক সহযোগিতার বদলে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। অন্যদিকে ইউক্রেনে বেশ কয়েকজন রুশ জেনারেল নিহত হয়েছেন যা ইতিহাসে বিরল।
এদিকে, অর্থের কারণে বিশ্বাসঘাতকতাকারী কারা তা সামনের দিনগুলোতে স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ব্রাসেলসে পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেনের মিত্রদের এ যুদ্ধে হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে রাশিয়া তার অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগ শুরু করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একমাস পূর্তির দিনে ব্রাসেলসে জি-৭, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে জেলেনস্কি বলেন, আমরা জানি, রাশিয়া ইতোমধ্যে তাদের স্বার্থ রক্ষায় তোড়জোড় শুরু করেছে। এগুলো যুদ্ধের স্বার্থ। আমরা জানি, তারা কিছু অংশীদারের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করছে।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর খুব বেশি অগ্রগতি এখনও পর্যন্ত হয়নি। এর মধ্যে বেলারুশের মধ্যস্থতায় তিনটি এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় দুটি বৈঠক করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ হয়নি। যদিও তুরস্ক দাবি করছে, তাদের মধ্যস্থতায় করা বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে।
অন্যদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা নিয়ে এখনও পর্যন্ত নীরব রয়েছে চীন, ভারতসহ কয়েকটি দেশ। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করে ভারত। এতে আপত্তি করেনি যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে জাতিসংঘে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এখনও পর্যন্ত অবস্থান পরিষ্কার করেনি বেইজিং।
বেইজিং কর্তৃপক্ষের ওপর ওয়াশিংটনের চাপ প্রয়োগের কারণ হলো তারা রাশিয়ার মিত্রদেশ। যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে চীন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ঠাঁট বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে চীন।
ভারত-রাশিয়া ও ভারত-চীন
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক। সোভিয়েত যুগ থেকেই দেশটির সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল ভারতের। ১৯৬৫ সালের কাশ্মির নিয়ে পাক-ভারত যুদ্ধে রাশিয়ার তাসখন্দে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছিল। অন্যদিকে চীনের সঙ্গেও রাশিয়ার রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ, ঐতিহাসিক ও মতাদর্শীয় সম্পর্ক। ইতিহাস যোগসূত্র অনুযায়ী দুই দেশই সমাজতন্ত্র দ্বারা প্রভাবিত। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় লেনিনের সমাজতন্ত্র ও ১৯৪৯ সালে চীনে মাও সে তুংয়ের সমাজতন্ত্র (মাওবাদ) প্রতিষ্ঠিত হয়। এর ফলে ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে চীন।
আদর্শগত কারণে ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক একেবারেই বৈরী। এমনকি চীনের বন্ধুদেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সঙ্গেও রয়েছে বৈরি সম্পর্ক। ২০২০ সালের ১৬ জুলাই ভারতের পূর্ব লাদাখের তিনটি অঞ্চলে হামলা করে চীন। এছাড়া দেশভাগের সময় থেকে পাকিস্তানের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক শীতল।