লকডাউন : এক অন্যরকম দিন পূর্ব রাজাবাজারবাসীর
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১০, ২০২০ , ৭:১২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে প্রতিদিন সকালে থাকে এক অন্যরকম ব্যস্ততা। রিকশার টুংটাং, অফিসযাত্রীর তাড়া, অলিগলিতে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ভ্যানে পথচলতি মানুষের আটকে যাওয়া–এসব ওই এলাকার নিত্যদিনের চিত্র। স্বাভাবিকের চেয়ে সরু হওয়ায় গলিগুলোতে জ্যাম লেগেই থাকে। কিন্তু বুধবারের (১০ জুন) সকালে এসব কিছুই ছিল না। করোনা প্রভাব কমাতে ১৪ দিনের জন্য লকডাউন করে দেওয়ায় অন্যরকম সকাল শুরু করলো ওই এলাকাবাসী। পূর্ব রাজাবাজার ঘুরে দেখা যায়, আটটি প্রবেশপথের মধ্যে শুধু আইবিএ হোস্টেলের পাশেরটি খোলা রয়েছে। তবে সেই পথটি দিয়েও ওই এলাকায় অবস্থানরত সংবাদকর্মী, চিকিৎসক ও নার্স ছাড়া কাউকেই প্রবেশ বা বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।এদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন পেশার লোকজন পরিচয়পত্র নিয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য আসলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। অনেকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা ও বারবার অনুরোধ করেও এলাকা থেকে বের হতে পারেননি। কর্মস্থলে যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বাসায় ফিরে গেছেন। এলাকাবাসীকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করতে কাউন্সিলরের নির্দেশে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক সকাল থেকে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান শুভ নামের এক স্বেচ্ছাসেবক। তিনি আরও জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর সুবিধার্থে বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজারের ভ্যান আগে থেকেই প্রস্তুত করা ছিল। সেগুলো এলাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। সকালে কাজে যোগ দিতে বের হন বারডেম হাসপাতালের নার্সিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট রাহিলা খানম। তিনি বলেন, ‘সরকার জনসাধারণের ভালোর জন্যই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। যদিও এলাকাবাসীর বেশ কয়েকদিন কষ্ট হবে, তবু উচিত বিষয়টি মেনে চলা।’ অন্যদিকে, কাজে যোগ দিতে যেতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সায়মন সিয়াম নামে একজন। তিনি বলেন, ‘অফিসের উদ্দেশে বের হয়েছি। কিছুতেই বের হতে দিচ্ছেন না পুলিশ সদস্যরা। এভাবে ১৪ দিন লকডাউন থাকলে হয়তো চাকরিটা নাও থাকতে পারে।’ মূলত কারা কারা এই মুহূর্তে এলাকা থেকে বের হতে এবং প্রবেশ করতে পারছেন, জানতে চাইলে সেখানে কর্তব্যরত শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনজিৎ বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা এই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে যারা সাংবাদিক, ডাক্তার ও নার্স শুধুমাত্র তাদের বের হতে এবং প্রবেশ করতে দিচ্ছি। এর বাইরে অন্য কোনও পেশার কাউকেই বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু, একান্ত জরুরি প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখবো।’ প্রসঙ্গত, কোভিড-১৯ রোগটি ছড়ানোর ক্ষমতা সাধারণত ১৪ দিন ধরা হয়। এ কারণে পূর্ব রাজাবাজার আপাতত ১৪ দিন লকডাউন বন্ধ থাকবে। তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে ২১ দিন পর্যন্ত অবরুদ্ধ অবস্থা থাকতে পারে।