আজকের দিন তারিখ ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব লকডাউন শিথিলের পথে হাঁটছে বিশ্ব

লকডাউন শিথিলের পথে হাঁটছে বিশ্ব


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২২, ২০২০ , ৯:১৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : নভেল করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে  বিশ্বের দেশে দেশে চলছে লকডাউন। থমকে গেছে মানুষের জীবন-জীবিকা।  ধসে পড়ছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি। দুর্ভিক্ষসহ কঠিন বাস্তবতার দিকে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ব অর্থনীতি সচল রাখতে ও মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচাতে বিভিন্ন দেশ ধীরে ধীরে শিথিল করছে লকডাউন। ইউরোপের দেশগুলোতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ প্রথম থেকেই বেশি। সে কারণে ইউরোপের দেশগুলোতে লকডাউনও বেশ আগে থেকে। তবে ধীরে ধীরে ইউরোপের দেশগুলো লকডাউন শিথিল করছে। এরই মধ্যে ইতালি, স্পেন, ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, চেক রিপাবলিক ধীরে ধীরে লকডাউন শিথিল করেছে। এক মাসেরও বেশি সময় লকডাউন থাকার পর গত সপ্তাহে তা শিথিল করেছে স্পেন। একই সঙ্গে ইতালিতেও পাঁচ সপ্তাহ  টানা লকডাউন থাকার পর গত সপ্তাহে শিথিল করা হয়েছে। এসব দেশের বিভিন্ন এলাকার দোকানপাট ও কলকারখানা ধীরে ধীরে খুলছে। শিথিল করা এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের জীবনও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। আগামী ৪ মে থেকে ইতালিতে লকডাউন আরো শিথিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। ইউরোপের অন্যতম দেশ জার্মানিও লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০ এপ্রিল থেকে দেশটির ৮শ বর্গমিটার আয়তনের সব দোকানপাট খুলেছে। একই সঙ্গে গাড়ি, বইয়ের দোকান ও সাইকেলের দোকানও খুলেছে। এছাড়া গ্রিস ও দক্ষিণ কোরিয়ায় লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় লকডাউন শিথিলের পর সেখানে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এদিকে করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যুহারের শীর্ষস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে দেশটির সরকার লকডাউন করে রেখেছে গোটা দেশ। তবে  এই লকডাউনের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছেন অনেক মার্কিন নাগরিক। তারা এই লকডাউন মানতে নারাজ। সে কারণে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মার্কিন নাগরিকরা লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। অনেক জায়গায় লকডাউন ভেঙেই মিছিল সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা। বিক্ষোভ সমাবেশকারীদের যুক্তি হলো, মার্কিন নাগরিকরা ঘরে থাকবেন কিনা সে সিদ্ধান্ত একান্তই তাদের। সরকার এভাবে ঘরে বন্দি করতে পারে না। এছাড়া এতে দেশের অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়বে বলে যুক্তি দেখিয়েছেন তারা।  প্রতিবেশী দেশ ভারতেও লকডাউন চলছে। আগামী ৩ মে পর্যন্ত  এই লকডাউন চলবে। তবে ভারতেও লকডাউন শিথিলের পরিকল্পনা চলছে। একই সঙ্গে লকডাউনের শিথিলের পর সেদেশে কী কী বিধিনিষেধ থাকবে সেটা নিয়ে এখন থেকেই আলোচনা শুরু হয়েছে। গত ২১ এপ্রিল  ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এ নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। সেই বৈঠকে লকডাউন পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। ভারতে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন শিথিলও করা হয়েছে। দেশটির কেরালা, মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় লকডাউন শিথিল হয়েছে। মূলত সেসব এলাকায় করোনা পরিস্থিতির প্রকোপ কমছে, সেসব এলাকায় লকডাউন শিথিল হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ধাপে ধাপে বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন প্রত্যাহার করবে ভারত সরকার। করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লকডাউন কোনো কার্যকর সমাধান নয় বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞরাও। ভারতের  প্রখ্যাত মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. জয়প্রকাশ মুলিয়িল বলেছেন, করোনার বিরুদ্ধে লকডাউন কোনো সমাধান হতে পারে না। কেননা এটা একটি সাময়িক ব্যবস্থা। তিনি মনে করেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে লকডাউন ঘোষণা না করলেও দেশে কার্যত লকডাউন চলছে। বিভিন্ন জেলায় জেলায় ও থানায় থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে লকডউন করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে ছুটি ঘোষণা ও দোকান-পাট-কল-কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। যেটা অন্য দেশের মতোই লকডাউন। বাংলাদেশ সরকার গত ২৬  মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করে। আগামী ২৫ এপ্রিল এই ছুটি শেষ হবে। তবে ছুটির মেয়াদ আবারও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে।