শিল্প খাতে প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ছাড়ে বিলম্ব
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৩০, ২০২০ , ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
দিনের শেষে প্রতিবেদ : সরকার করোনাকালে কিছুটা স্বস্তি দিতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও তা প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতা কাটেনি। ফলে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান অনিশ্চয়তায় পড়েছে। এমনকি চলতি মূলধন হিসাবেও যে সব প্রতিষ্ঠানের জন্য স্বল্প সুদে ঋণসহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সেটিও প্রক্রিয়াগত জটিলতায় আটকে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি খাতের শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না। করোনার প্রভাবে সব কিছু স্থবির হয়ে পড়ায় প্রণোদনার প্রয়োজন পড়ে এবং সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। উন্নত দেশগুলো সব শ্রেণিপেশার নাগরিকদের জন্য প্রণোদনা হিসাবে নগদ অর্থ প্রদান করেছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও প্রণোদনা থেকে বাদ যায়নি কেউই। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাত অগ্রাধিকার পেয়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা সুবিধা পায়। মাত্র ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে তারা কর্মীদের তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের সুযোগ পায়। বলা হয়েছিল, দেশে গার্মেন্টসের অধিকাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। যদিও প্রণোদনা নিশ্চিত হওয়ার পর রপ্তানি আদেশ আছে মর্মে এখন গার্মেন্টস খোলার জন্য মরিয়া। কিন্তু সহায়ক সুতা ও কাপড় খাতে প্রণোদনার এই সুবিধা দেওয়া হয়নি। তাতে করে এই দুই খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের দাবি, সুতা ও কাপড় খাতও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক খাত। সে হিসেবে রফতানি খাতের প্রণোদনা প্যাকেজে তারাও সুবিধা প্রাপ্য। ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি এপ্রিল মাসের বেতন প্রণোদনার অর্থে দেওয়ার কথা। মাস শেষ হতে চললেও এতে তেমন অগ্রগতি হয়নি। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখাও বন্ধ রয়েছে। অনেকে এখনো আবেদন করতে পারেনি। যদিও রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২ মে পর্যন্ত আবেদন গ্রহণের সময় বাড়ানো হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে আবেদন চলমান রয়েছে। শিল্পখাতের আকার অনুযায়ী ৪ ও সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে চলতি মূলধন ঋণ সুবিধার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে—‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে আবেদনকারীরাই এসব সুবিধা পেতে এগিয়ে থাকবেন। আবার কোনো কোনো সূত্র বলেছে, আবেদন করলেই টাকা পাওয়া যাবে না। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কও এখানে গুরুত্বপূর্ণ যা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনেই উল্লেখ আছে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক নিজের পছন্দের গ্রাহকদের আগে বাছাই করবে। সূত্রমতে, প্রক্রিয়াটাও জটিল। গ্রাহককে প্রণোদনা সুবিধা পেতে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করতে হবে। শাখা থেকে প্রধান কার্যালয়ে যাবে এবং ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ তা অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যাচাইবাছাই করার পর তা অনুমোদিত হবে। এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় মাসাধিককাল লেগে যেতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করলে কর্মী এবং উদ্যোক্তা উভয়ের জন্যই ভালো। ক্রান্তিকালে কর্মীদের বেতন-ভাতা সঠিক সময়ে দিতে না পারাটা হবে অমানবিক। এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক সরকার ঘোষিত প্যাকেজ কর্মসূচিতে ব্যাংকগুলোকে অর্থায়নের জন্য রিজার্ভ থেকে ৩৮ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা এই মুহূর্তে টাকা না ছাপিয়ে সরবরাহ বাড়ানোর উপায় হিসেবে নেওয়া হয়েছে।