আজকের দিন তারিখ ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ সোনাইমুড়ীতে হত্যার পর নাফিজকে কাঁথায় ঢেকে রাখেন সৎমা

সোনাইমুড়ীতে হত্যার পর নাফিজকে কাঁথায় ঢেকে রাখেন সৎমা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ১০, ২০২১ , ১:১৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


নোয়াখালী ও সোনাইমুড়ী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার আবিরপাড়া এলাকার মো. আবদুল্লাহ আল নাফিজ (৮) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। ওই শিশুটিকে নির্যাতনে হত্যার পর তার লাশ কাঁথায় ঢেকে রাখেন সৎমা নূরজাহান আক্তার নূপুর (২৩) বলে জানায় পুলিশ। এ ঘটনায় সৎমা নূপুরকে গ্রেফতার করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বালিশ, একটি কাঁথা ও এক বোতল ভিক্সল। গ্রেফতার নূরজাহান আক্তার নূপুর উপজেলার সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবিরপাড়া এলাকার আজগর বেপারি বাড়ির মো. ওমর ফারুকের (৩৩) দ্বিতীয় স্ত্রী। সোমবার বিকালে সোনাইমুড়ী থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম (পিপিএম)। এর আগে শনিবার পারিবারিক অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও কলহ কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার জানান, শনিবার বিকালে নূরজাহান আক্তার নূপুর তার স্বামীর আগের ঘরের শিশুসন্তান মো. আবদুল্লাহ আল ওরফে নাফিজকে হত্যা করে। খবর পেয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ গত রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিহতের সৎমা নূপুরকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এর পর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আসামি নূপুর জানায়, সৎ ছেলে নাফিজকে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া না দিয়ে শনিবার বিকালে ঘরের মাঝখানের রুমে খাটের ওপরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করলে সে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। এর পর তার ওপরে একটি কাঁথা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পরে নূপুর পাশের মামাশ্বশুরের ঘরে গিয়ে গল্প করে।
তা ছাড়া নূপুর এ হত্যা ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে বিজ্ঞ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মো. শহীদুল ইসলাম (পিপিএম) জানান, ফারুকের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রীর ২০১৮ সালে তালাক হয়। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কয়েক দিন পর ফারুক নূপুরকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় ফারুক দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে তার আগের ঘরের একটি ছেলে থাকার কথা গোপন রাখেন। দ্বিতীয় স্ত্রী প্রথম থেকেই তার স্বামীর প্রথম সংসারের ছেলে নাফিজকে সহ্য করতে পারত না। তাকে অকারণে মারধর করত। পরে ফারুক তার ছেলে সোনাইমুড়ীর আমিশাপাড়ার হানারবাগ এতিমখানায় রেখে লেখাপড়া করায়। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে নাফিজ বাড়িতে ফিরলে নূপুর অকারণে তাকে মারধর ও গালমন্দ করত। শনিবার দুপুরের খাবার খেয়ে নাফিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। দুপুর ৩টার দিকে ফারুক ছেলেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিয়ে সৎমায়ের সঙ্গে ঘরে থাকার জন্য বলে তিনি পুকুরে মাছের খাবার দিতে যান। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফারুক বাড়িতে ফিরলে ছেলেকে ডাকাডাকি করে। ছেলের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরে প্রবেশ করলে তার মরদেহ খাটের ওপর দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত আসামিকে আটক করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা দ্বিতীয় স্ত্রীকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলায় নূপুরকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এ সময় প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম ও পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ।