আজকের দিন তারিখ ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ হাড় কাঁপানো শীতে কাবু জনজীবন

হাড় কাঁপানো শীতে কাবু জনজীবন


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ৫, ২০২৩ , ৫:০৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


দিনের শেষে ডেস্ক : বৈজ্ঞানিক হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে কেবল শ্রীমঙ্গল আর ঈশ্বরদীতে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল শ্রীমঙ্গলে। আর ঈশ্বরদীতে ছিল ১০ ডিগ্রি। এছাড়া আর কোথাও শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে না। কিন্তু এরপরও অনুভূত হচ্ছে বেজায় শীত। শীতল সমীরণ, যা হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। ঢাকায় মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার শীতের অনুভূতিও বেশি ছিল। কনকনে শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই। শীত নিবারণে মানুষকে বিভিন্ন স্থানে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে সোয়েটার, জ্যাকেট, শাল-চাদর, মাফলার-কানটুপিসহ গরম জামা-কাপড়ের কদর। ফলে বাজারে গরম পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এমন অবস্থা কেন-এই প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও তীব্র শীত অনুভবের কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাতাসের গতি এবং সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যাওয়া। এছাড়া কুয়াশার প্রকোপ, সূর্যের স্বল্পস্থায়ী কিরণকাল কিংবা একেবারেই সূর্যের মুখ দেখতে না পাওয়ার ওপরও শীতের তীব্রতা নির্ভর করে। বাতাসের গতি বেশি থাকলেও শীতের অনুভূতি ও প্রকোপ বেশি মনে হয়। বর্তমানে প্রকৃতিতে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সাধারণত শীতে সবচেয়ে বেশি কাবু হয়ে থাকে বয়স্ক মানুষ এবং শিশুরা। অনেকেই এই সময়ে শীতজনিত ডায়রিয়া, সর্দি-জ্বর প্রভৃতিতে ভুগে থাকে। শীতের উল্লিখিত পরিস্থিতির মধ্যেই আবার বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে মৌসুমি লঘুচাপ। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের এই লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়া উপমহাদেশীয় উচ্চচাপবলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এসব বাহ্যিক কারণও শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দিয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও বেশি। অন্যদিকে শীতের পাশাপাশি বেড়েছে কুয়াশার প্রকোপ। রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় দিনেও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা দেখা যায়। সারা দিন দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শৈত্যপ্রবাহ না হওয়া সত্ত্বেও বর্তমানে কনকনে শীত অনুভবের চারটি কারণ আছে। এগুলো হলো-মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, সূর্যের স্বল্পস্থায়ী কিরণকাল, কুয়াশার প্রকোপ এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার কম পার্থক্য। আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে এবং ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। এছাড়া ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে এলে তা মাঝারি আকারের এবং এর নিচে নামলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। বর্তমানে দেশের দুটি এলাকা শৈত্যপ্রবাহভুক্ত হলেও আগামী কয়েকদিনে এ হাড় কাঁপানো শীতের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএমডি। কেননা বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপের কারণে জলীয় বাষ্প দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমদিক থেকে লঘুচাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে। আর তেমনটি হলে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে।