অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতার আশ্বাস চীনের
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১৩, ২০১৬ , ১১:০১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
কাগজ অনলাইন ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে চীন কর্তৃপক্ষের আরো সহযোগিতার অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে রোববার কুনমিংয়ে ৬ দিনব্যাপী চতুর্থ চায়না-সাউথ এশিয়া এক্সপো (সিএনএ) এবং ২৪তম চায়না কুনমিং ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট পণ্যের মেলার উদ্বোধন হয়েছে।
ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ের দিয়ানচি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনন অ্যান্ড এক্সিবিশিন সেন্টারের বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ মেলা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের হলরুম চীনের বিভিন্ন প্রদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ ছিলো।
এদের মধ্যে নীতিনির্ধারক, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী নেতা এবং আঞ্চলিক যোগাযোগ সংযোগ ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।
চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ঝং গাওল উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, চীন সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য শিল্প সক্ষমতা তৈরি। এ কারণে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগে (এফডিআই) চীন একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, উভয়মুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদারে চীন এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে কুনমিং মেলা ভূমিকা রাখবে।
তবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে বেশির ভাগ অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎখাতের মতো বিভিন্ন দেশে চীনের বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন ইতোমধ্যেই আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছে।
দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সহযোগিতা পরবর্তী ধাপে উন্নয়নই এই মেলার লক্ষ্য- এ কথা উল্লেখ করে ঝং গাওল বলেন, উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য চীন থেকে আরো সহযোগিতা দেয়া হবে।
তিনি সংশ্লিষ্ট সকল দেশকে তাদের ভিসা এবং কাস্টমস কার্যক্রম সহজতর এবং দেশগুলোর মধ্যে আরো সরাসরি ফ্লাইট চালুর পরামর্শ দিয়ে বলেন, এটি ব্যবসা-বাণিজ্যের সহায়ক হবে, পাশাপাশি ট্যুরিজমের প্রসার ঘটছে।
চীনের ভাইস মিনিস্টার ফর কমার্স গাও ইয়ান বলেন, তার সরকার এফটিএ’র (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) মতো বিভিন্ন ইস্যুতে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে চীন এবং দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি পায়।
চীনা ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইউয়ানচাও এবং ইউনানের প্রেসিডেন্ট চেন হাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়া আয়োজক দেশটির এবং দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এ বছরের মেলার লক্ষ্য হচ্ছে সহাবস্থান, আন্তরিকতা, পারস্পরিক স্বার্থ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সবার জন্য লাভজনক সহযোগিতা নীতিতে চীন, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা।
এ বছরের মেলার নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান গাও সুকসুন মেলা-পূর্ব এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
চতুর্থ চায়না-সাউথ এশিয়া এক্সপোতে বিশ্বের ৭২টি দেশ থেকে প্রতিনিধিরা অংশ নেয়। দক্ষিণ এশিয়া থেকে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এবং নেপাল মেলায় অংশ নিয়েছে।
মেলায় মোট ১৮টি প্রদর্শনী প্যাভিলিয়ন রয়েছে। ৮ হাজার বুথে প্রায় ৫ হাজার প্রদর্শক আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত ৬ দিন তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। মেলার প্রদর্শনে ৭৪ হাজারের বেশি টিকেট ইতোমধ্যেই বিক্রি হয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি কো-অপারেশন ফোরাম, চায়না-সাউথ এশিয়া বিজনেস ফোরামের মতো প্রতিষ্ঠানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন এবং অর্থনৈতিক করিডোর নিয়ে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মায়ানমারের (বিসিআইএম) চেম্বার ফেডারেশনগুলো বৈঠক করবে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদল মেলার পাশাপাশি অন্যান্য ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন।