আজকের দিন তারিখ ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব লীড ইউক্রেন ইস্যু: যে পথে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া

ইউক্রেন ইস্যু: যে পথে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২ , ১২:০২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব লীড


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া বরাবরের মতোই জোর দিয়ে বলে আসছে, তারা ইউক্রেন আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছে না। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্য, রাশিয়া ‘যেকোনো সময়’ দেশটিতে হামলা চালাতে পারে। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। প্রত্যেকে দেখতে পারে সম্ভাব্য রুটগুলো কী কী। সামরিক বিশ্লেষকরা একমত যে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে প্রায় এক লাখ ৯০ হাজার সৈন্য জড়ো করেছে রাশিয়া। একইসঙ্গে তাদের হাতে বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে।

বেলারুশ বিকল্প

রাশিয়া যদি ইউক্রেন সরকারের পতন নিশ্চিত করতে চায়, তবে উত্তরের বেলারুশ ধরে হামলা চালানোর সম্ভাবনাই জোরালো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে এমনটাই বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সিএনএ-এর মুখপাত্র মাইকেল কফম্যান।

বেলারুশে এ মুহূর্তে ৩০ হাজার রুশ সেনা যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে আছে স্বল্পপাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র এবং পর্যাপ্ত রকেট লঞ্চার। এছাড়াও আছে এসইউ-২৫ গ্রাউন্ড অ্যাটাক এয়ারক্রাফট ও এসইউ ফাইটার। মাইকেল কফম্যান বলেন, পূর্বে রাশিয়ার সীমান্তজুড়েই আছে হামলার পূর্ণ প্রস্তুতি। সীমান্তের পুরোটা জুড়েই রাশিয়ার সেনা অপেক্ষা করছে। তবে কিয়েভের দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে চেরনোবিল রুশ সেনারা এড়িয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সেথ জোনসের মতে রাশিয়ার দিক থেকে হামলা চালানো হলে নভে ইউরকোভিচি বা ত্রোয়েবোর্তনো শহর থেকেই সেটা শুরু হবে।

ক্রিমিয়া

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের বেন বেরি বলেন, ক্রিমিয়া ধরে যদি কিয়েভের দিকে রুশ সেনারা এগোতে থাকে তবে ইউক্রেনের বিপুল পরিমাণ সেনা দেশটির নিপার নদীর পূর্ব পাশে আটকা পড়বে। সেক্ষেত্রে রুশ সেনারা পশ্চিম, পূর্ব ও উত্তর মিলিয়ে ইউক্রেনের যোদ্ধাদের ঘিরে ফেলতে পারবে। আবার যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিম থেকে রুশ সেনাদের লক্ষ্য থাকবে খেরসন ও ওদেসা দখল করা। সেই সঙ্গে পূর্বের মেলিতোপোল এবং মারিওপোলও থাকবে দখলের তালিকায়।

এটা সম্ভব হলে ক্রিমিয়া ও অন্য রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে এক ধরনের যোগাযোগ তৈরি হয়ে যাবে। ক্রিমিয়ার উপকূলে এরইমধ্যে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ঘোরাফেরা শুরু করেছে। আগ্রাসন শুরু হলে জাহাজ থেকে আর্মার্ড ভেহিক্যাল ও ট্যাংক নামাতে পারবে রাশিয়া।

পূর্বের দুই শহর

২০১৪ সাল থেকেই ‍পূর্বের লুহানস্ক ও ডোনেস্ক দখল করে আছে রুশপন্থী বিদ্রোহীরা। সেখানে রুশ সেনাদের সঙ্গে অন্তত ১৫ হাজার বিদ্রোহী যোগ দেবে। ইউক্রেন সরকারের মতে সংখ্যাটা আরও বেশি। পূর্বের রোস্তোভ এলাকায় রাশিয়ার অন্তত ১০ হাজার সেনা স্থায়ীভাবে মোতায়েন করা আছে। সম্প্রতি সেখানে আরও সেনার আনাগোনা বেড়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমাদের ধারণা, ইউক্রেনের পূর্বের অঞ্চলগুলোয় রুশভাষী জনগণকে ‘রক্ষা করার’ মিশন দিয়েই হামলার সূচনা হতে পারে। বেন বেরি বলেন, যুদ্ধ যত ছোট আকারেই শুরু হোক না কেন, ইউক্রেনের এয়ার ডিফেন্স ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ড অবকাঠামোগুলোও আক্রান্ত হবে। বিশ্লেষকরা অবশ্য ভৌগলিক সীমার বাইরে সাইবার হামলার কথা বলছেন । কফম্যানের মতে, হামলা যেখানেই হোক সেটার পরিসর নির্ভর করবে রাশিয়ার রাজনৈতিক অভিসন্ধির ওপর, যা এখনও পরিষ্কার নয়।