আজকের দিন তারিখ ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// ইসির প্রতি দল ও জাতির আস্থা ফেরানোর আহ্বান সম্পাদকদের

ইসির প্রতি দল ও জাতির আস্থা ফেরানোর আহ্বান সম্পাদকদের


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৬, ২০২২ , ৪:৫১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক :   কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে ইসিকে সংবিধান প্রদত্ত ক্ষমতার পূর্ণ ও যথাযথ প্রয়োগ করে নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনাকে দল এবং জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য করে আস্থা অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা। বুধবার (৬ এপ্রিল) সকাল ১১টা নাগাদ নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংলাপে এ আহ্বান জানান সম্পাদকরা। এসময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অন্য চার কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব এবং আমন্ত্রিতদের মধ্যে ২৩ জন সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

ডেইলি অবজারভার এর সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, গত ইসি তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। আপনাদেরকে উইল ফোর্স তৈরি করে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। দল ও জাতির আস্থা অর্জন করতে হবে। তার জন্য সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগে নিজেদেরকে আরো শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকে সুষ্ঠু করে তার প্রমাণ দিতে হবে।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, আগের ইসি তাদের ওপর বর্তিত সাংবিধানিক ক্ষমতার কোনোরকম সুস্থ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই দল ও ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থাহীনতায় ভুগছে। এ কমিশনের প্রধান দায়িত্ব হবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসির আস্থা ফিরিয়ে আনা। গত ইসির নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য হয়েছে। একজন আরেক জনের বিপরীতে বক্তব্য দিয়েছেন। এবার যেন ইসির ঐক্য বজায় থাকে। তবে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের নিয়ে সময়মত সিদ্ধান্ত না নেয়ার বিষয়ে তিনি ইসির সমালোচনাও করেন।

তিনি আরও বলেন, গতকাল আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন যাতে বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আসে। এটা একটা লজ্জাস্কর ঘটনা। দেশের কোনো দল নির্বাচনে আসবে কি আসবে না তা ইসির দায়িত্ব। এটা তারা দেখবেন। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য রাষ্ট্রের দুতায়ালী আমরা কেন বরদাস্ত করবো।

যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন শুধুমাত্র ইসির ওপর নির্ভর করে না, সরকারের সদিচ্ছা, রাজনৈতিক দল ও ভোটারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ভোটকর্মী সকলের ওপর নির্ভর করে। তিনি সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসিকে জনগণকে সম্পৃক্ত করার কাজ করতে হবে। ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হলে আমাদের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।

আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. গোলাম রহমান সিইসিকে আগে থেকেই আস্থা সঙ্কটে না ভোগার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসিকে তার ক্ষমতার সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, আমরা এ দেশে থাকতে চাই, এখানে মরতে চাই। তাই আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রয়োগ সুষ্ঠুভাবে দেখতে চাই। সে জন্য তিনি বর্তমান ইসিকে ‘ডু অর ডাই’ মনোভাবাপন্ন হবার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, আমাদের পুরো পদ্ধতি ভেঙে গেছে, আইনের প্রয়োগ নেই, মানবতা নেই, মানবিকতা হারিয়ে গেছে।

জাতীয় নির্বাচন একেক বিভাগে এক এক দিনে ভোট নেয়া ও ইসির নিজস্ব জনবলকে রিটার্নিং কর্মকর্তা করার আহ্বান জানান তিনি। তাসমিমা হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচনে ইসি যদি কঠোর না হয়, তাহলে প্রার্থী ও দুষ্কৃতকারীরা মেশিনগান নিয়ে ভোটের মাঠে নেমে পড়বে।

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, নির্বাচন ইসির একার পক্ষে হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রশাসন পুলিশ সবকিছু ঠিক মনে রাখে, শুধু গণতন্ত্রকে ভুলে যায়। তিনি ডিসিদের হাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব না দিয়ে ইসির কর্মকর্তাদের হাতে দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ক্ষমতায় বা সরকারে যারা থাকেন তারা যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারে তা ইসিকে শক্ত হাতে বন্ধ করকে হবে। সংলাপে বক্তারা নতুন ইসিকে বিগত ইসিগুলোর ভুলত্রুটি পর্যালোচনা করে তাদের প্রতি দল ও ভোটাদের আস্থাহীনতা ফিরিয়ে আনা এবং আগামীতে জাতিকে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়ার আহ্বান জানান। অনেকে ইভিএম ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন।

প্রতি উত্তরে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের দিক থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি থাকবে না, আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। আজকের সংলাপ থেকে আমরা বেশ কিছু পরামর্শ পেয়েছি। সেগুলো পর্যালোচনা করে আমরা এগিয়ে যাবো। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা রাষ্ট্রের বিষয়। তবে আমরা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার চেষ্টা করবো।