উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি : বেসরকারি কলেজই ভরসা
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৩, ২০১৬ , ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
চট্টগ্রাম: এবছরের প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮ হাজার ৫০২ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে অধিকাংশই নগরীর স্কুলের। ফলে মেধাবীরাও নগরীর নামকরা কলেজগুলোতে পড়ার সুযোগ পাবে না। তাই বেসরকারি কলেজগুলোই এখন ভরসা।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, নগরীর সাতটি সরকারি কলেজে আসন রয়েছে ৬ হাজার ৮০৫টি। এরমধ্যে বিজ্ঞানে ২ হাজার ২২০, মানবিকে ১ হাজার ৮৫০ ও ব্যবসায় শিক্ষায় ২ হাজার ৭১৫ আসন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়া বলেন, নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সবাই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে না। তবে এখন অনেক বেসরকারি কলেজে ভাল পাঠদান হচ্ছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছে।
ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক কলেজ, ইস্পাহানি পাবলিক কলেজ, হাজেরা-তজু ডিগ্রি কলেজ, এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৩টি কলেজের পাশপাশি ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠা কলেজে পড়ার দিকেও ঝুকছে শিক্ষার্থীরা।
এক্ষেত্রে শিক্ষার মান, অবকাঠামো, দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেই বেছে নিচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেসরকারি পর্যায়ে নামকরা কলেজের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজ, সাউথ এশিয়ান কলেজের মতো নতুন কলেজগুলো থাকছে পছন্দের তালিকায়। কারণ ইস্পাহানি, এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ এবং সিটি করপোরেশন কলেজে ভর্তি হতে না পারলে এসব কলেজেই পড়তে হবে।
নগরীর বেসরকারি কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে পরীক্ষার্থী ও জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে তা বেড়েছে কয়েকগুণ। সরকারি কলেজে আসন সংকটের কারণে বর্তমানে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্খিত কলেজে ভর্তি হতে পারছে না। ফলে বেসরকারি কলেজের দিকেই ঝুকছে।
এতে ক্রমান্বয়ে চাপ বাড়ছে মানসম্পন্ন বেসরকারি কলোজগুলোতে।
দক্ষ শিক্ষক, মানসম্পন্ন শিক্ষার কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এখন বেসরকারি কলেজের দিকেই ঝুকছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খান বলেন, মানসম্পন্ন পাঠদান ও ভাল ফলাফলের কারণে বিজ্ঞান কলেজ সবার নজর কেড়েছে। ফলে এখন বিজ্ঞানের সেরা শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পড়তে আসছে।
রাজধানী ঢাকায় ভাল কলেজগুলোর সবগুলোই বেসরকারি উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বিজ্ঞান কলেজ এই স্থানটি দখল করেছে। পড়ালেখা ও ফলাফলের মানে বিজ্ঞান কলেজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য চট্টগ্রামের সেরা কলেজ। কলেজটিতে এসি ক্লাসরুমসহ সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান।
সাউথ এশিয়ান কলেজকে চট্টগ্রামের প্রথম পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল কলেজ দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও আবদুল্লাহ আল মামুন। এখানে পাঠ্য বইয়ের ডিজিটাল ভার্সনসহ ল্যাপটপ বা ট্যাব দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। রয়েছে মাল্টিমিডিয়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুম, অভিজ্ঞ শিক্ষক।
শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের জন্য মোবাইল এসএমএস পদ্ধতি চালু রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা কলেজে প্রবেশ করলেই মোবাইলে এসএমএস পৌঁছে যাবে। ফলে অভিভাবকদের আর চিন্তায় থাকতে হয় না।
মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকদের সন্তানের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় এবং মেধাবী অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে প্রাইভেট পড়তে হয় না। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজের পক্ষ থেকে আলাদা ক্লাবের ব্যবস্থা করা হয়।
বিজ্ঞান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খান জানান, চকবাজার ও আগ্রাবাদে কলেজের দুটি ক্যাম্পাস রয়েছে। পাশাপাশি চকবাজারে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ রয়েছে। সেখানেও বিজ্ঞানের মতো ব্যবসায় শিক্ষার শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে। বিজ্ঞান কলেজে ৬৫০ এবং কমার্স কলেজে ১৫০টি আসন রয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কলেজে ভর্তির জন্য মোবাইল এসএমএস ও অনলাইনে আবেদন করা যাবে আগামী ৯ জুন পর্যন্ত। যারা খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছে তাদেরও এই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ১৬ জুন প্রকাশ করা হবে ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা। ১৮ থেকে ২২ জুন পর্যন্ত নির্বাচিতদের ভর্তি করানো হবে। ২৩ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত অপেক্ষমান তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ১০ জুলাই উচ্চ মাধ্যমিকে ক্লাস শুরু হবে। ১০ থেকে ২০ জুলাইয়ের মধ্যে বিলম্ব ফিসহ ভর্তি হওয়া যাবে।