আজকের দিন তারিখ ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব উত্তর প্রদেশে মুসলিম শিশুকে থাপড়ানোর নির্দেশ, মামলা, নিন্দা

উত্তর প্রদেশে মুসলিম শিশুকে থাপড়ানোর নির্দেশ, মামলা, নিন্দা


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২৭, ২০২৩ , ১১:২৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : মুসলিম এক শিশু শিক্ষার্থীকে থাপড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের শিক্ষিকা ত্রিপ্তা তাইগি। এমন একটি ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অবশ্য ওই শিক্ষিকা বলছেন, এ জন্য তিনি লজ্জিত নন। তিনি বলেছেন, স্কুলে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে এমন নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। শিক্ষিকা ত্রিপ্তা তাইগি মুজাফফরনগরে নেহা পাবলিক স্কুলের প্রিন্সিপাল। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ৭ বছর বয়সী একটি শিশুকে থাপড়ানোর জন্য তিনি অন্য শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। আর ওই শিশুটি অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে কাঁদছে। তার গণ্ড বেয়ে পড়ছে অশ্রু। শিক্ষিকার এমন নির্দেশ নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বলা হচ্ছে, তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার জন্য এ নির্দেশ দিয়েছেন। তবে তার জবাব, গ্রামের মানুষদেরকে আমি একজন শিক্ষিকা হিসেবে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন। নিজের দেয়া নির্দেশকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে বলেন, স্কুলে শিশুদের নিয়ন্ত্রণ করতে এমন নির্দেশ গুরুত্বপূর্ণ। সরকার তো আইন তৈরি করেছে। কিন্তু আমাদেরকে স্কুলে ছেলেমেয়েদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তাই এভাবেই আমরা এসব শিশুকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকি।
এর আগে ভাইরাল ভিডিওকে তিনি ছোটখাট বিষয় বলে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন, আমার আসলে ওই শিশুটিকে থাপড়ানোর উদ্দেশ্য ছিল না। স্বীকার করছি এটা আমার ভুল হয়েছে। অযথাই একে একটি বড় ইস্যু বানানো হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করেছেন পুলিশের সিনিয়র এক কর্মকর্তা। তারা দেখতে পেয়েছেন, ওই শিক্ষিকা বলেছেন- এসব মুসলিম শিশুর মায়েরা তাদের সন্তানের পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দেয় না। এ জন্য তাদের শিক্ষাজীবন একেবারে গোল্লায় যায়।
এ অবস্থায় ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুজাফফরনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ মাল্লাপ্পা বাঙ্গারি। তিনি বলেছেন, আমরা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করেছি। ওই শিশুটির পিতার অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একটি মামলা নিবন্ধিত করেছি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগে ওই শিশুটির পিতা বলেছেন, তার ছেলেকে কয়েক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। তাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। প্রহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ছেলের বয়স মাত্র সাত বছর। অন্য শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে একের পর এক প্রহার করেছে আমার ছেলেকে। এই ভিডিও ধারণ করেছে আমার ভাতিজা। কোনো একটা কাজে সে স্কুলে গিয়েছিল। আমার সাত বছর বয়সী ছেলেকে এক বা দুই ঘন্টা ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। সে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। এটা হিন্দু-মুসলিম ইস্যু নয়। আমরা চাই আইন তার নিজস্ব গতিতে চলুক। ঘটনার পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে আমার ছেলে। ওদিকে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। রাজনীতিকরাও এর নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, এটা ঘৃণাপ্রসূত অপরাধ। উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রিজেশ পাঠক বলেছেন, আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি এবং এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা নেয়া হবে।