আজকের দিন তারিখ ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় এই ভোগান্তির শেষ কোথায়?

এই ভোগান্তির শেষ কোথায়?


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৩, ২০২০ , ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


করোনা ভাইরাসের টেস্ট করতে গিয়ে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। দেশের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন। আবার টেস্ট করাতে পারলেও ফল পেতে পেরিয়ে যাচ্ছে ৪ থেকে ১৫ দিন। সময়মতো টেস্ট না হওয়ায় অনেকে মারা যাচ্ছেন। আবার যে টেকনোলজিস্টরা নমুনা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও পরীক্ষা করেন তাদের দক্ষতা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে টেস্ট টেস্ট ও টেস্টের কথা বলা হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এর ভিন্ন চিত্র। এই মহাসংকটে করোনা টেস্ট এবং রিপোর্ট নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা দ্রুত সমাধানে পথ বের করতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম থেকেই টেস্টের বিষয়ে জোর দিয়ে আসছে। পরীক্ষার সুবিধা বাড়িয়ে শনাক্ত সংখ্যা বাড়াতে হবে। শনাক্ত ব্যক্তিদের আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদেরও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে। তবে নমুনা সংগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষার যেসব সুযোগ-সুবিধা দরকার সেগুলোও সঙ্গতিপূর্ণভাবে বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী কি এগোতে পেরেছি? বর্তমানে দেশে ৬২টি ল্যাবরেটরিতে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হচ্ছে। ৬২টি টেস্টিং সেন্টারের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে চাহিদা আছে ২০ হাজার কিটের। তবে এর চেয়ে আরো চার-পাঁচগুণ বেশি মানুষ টেস্ট করাতে আগ্রহী। বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসছে টেস্ট এবং রিপোর্ট সংক্রান্ত নানা প্রতিবেদন। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চিন্তা ও উদ্বেগের কিছু নেই। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ল্যাবগুলোতে পরীক্ষার জন্য নমুনা স্তূপ হয়ে থাকছে। পরীক্ষার চাপ বাড়ায় এক ল্যাবের নমুনা পাঠাতে হচ্ছে আরেক ল্যাবে। করোনা পরীক্ষার পরিধি না বাড়িয়ে শুধু নমুনা সংগ্রহ বাড়িয়ে কোনো সমাধান হবে না। দিন দিন এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। করোনার হটস্পট নারায়ণগঞ্জের খানপুর হাসপাতালে পাঁচদিন ধরে পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন ২৮২টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা আছে। অন্যদিকে পরীক্ষা করাতে আসেন এক হাজারেও বেশি। ফলে কিট থাকলেও অধিকাংশ মানুষকেই ফিরে যাচ্ছেন। এই চিত্র দেশের অধিকাংশ হাসপাতালে। পরীক্ষার পরও রয়েছে ফলাফল নিয়ে নানা সন্দেহ। করোনা ভাইরাসের নমুনা কীভাবে সংগ্রহ করা হচ্ছে, সংরক্ষণ করা হচ্ছে এবং পরীক্ষা করা হচ্ছে সেটার ওপর নির্ভর করবে ফলাফল কতটা নির্ভুল আসবে। এই কাজের জন্য দক্ষ জনবলের দরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নমুনা পরীক্ষায় সঠিক ফলাফল আসার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় জড়িত। যেমন নমুনাটি কখন সংগ্রহ করা হয়েছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দুদিন এবং সপ্তম দিনের পর নমুনা নিলে ফলাফল অনেক সময় ভুল আসতে পারে। এছাড়া কোথা থেকে অর্থাৎ ফুসফুসের পানি, লালা, কফ নাকি নাক থেকে নমুনা নেয়া হয়েছে তার ওপরও ফলাফল নির্ভর করে। বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাস পরীক্ষার সংখ্যা দৈনিক ২০ হাজার বা তার চেয়ে বেশি করার প্রক্রিয়া চলছে। এটি আশার কথা। আমরা বলব পরীক্ষাগার দ্রুত চালুর উদ্যোগ নিন। পাশাপাশি দক্ষ জনবল গড়ে তোলার পাশাপাশি টেস্টের সুবিধা প্রতিটি জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা হোক।