এক ভবনে ৩টি ভিন্ন সময়ে ইফতার
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১২, ২০১৬ , ১২:২৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: এক্সক্লুসিভ
অনলাইন আন্তর্জাতিক ডেস্ক: একই ভবনে বসবাস করেন তারা। কিন্তু কেউ ইফতার করছেন হয়তো ৬টা ৪৭ মিনিটে। আবার কেউ ৬টা ৫০ মিনিটে।
অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। একই দেশ, একই স্থান এমনকি ভবনও একটাই। কিন্তু এ ভবনের বাসিন্দারা সাহ্রি ও ইফতার করছেন তিনটি ভিন্ন সময়ে।
বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বুর্জ্ খলিফায় এটিই নিয়ম। ১৬০ তলার এই বুর্জের উচ্চতা ৮২৮ মিটার (২ হাজার ৭২২ ফুট)।
এই উচ্চতার কারণেই সেখানে সময়ের এই হেরফের হয়। অর্থাৎ ভবনের নিচতলায় যখন সূর্য ডোবে, ১৬০ তলায় ডোবে এর আরো তিন মিনিট পর। আবার সূর্য ওঠার সময় ঘটে ঠিক উল্টো ঘটনা। তখন ১৬০ তলায় সকাল হয়ে যায় তিন মিনিট আগেই।
তাই বুর্জ্ খালিফার সর্বোচ্চ তলায় বসবাসকারী মুসলমানদের ইফতার করতে হয় কিছুটা দেরিতে। ২০১১ সালে এমনটিই জানিয়েছিলেন, দুবাই ইসলামিক অ্যাফেয়ারস ডিপার্টমেন্টের ওই সময়ের ফতোয়া বোর্ডের প্রধান আহমেদ আব্দুল আজিজ আল হাদ্দাদ। তিনি বলেন, ভবনের উচ্চতার বিভিন্নতার কারণে বুর্জ খলিফার বাসিন্দারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইফতার, মাগরিবের নামাজ ও ফজরের নামাজ পড়বেন।
এবারও এক ফতোয়ায় দুবাইয়ের প্রধান ইমাম বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবনে বসবাসকারী মুসলমানদের প্রতি তাদের নামাজ ও ইফতারের সময় নির্ধারণ করে নেওয়ার আহ্বান জানান।
ইসলামিক এফেয়ার্স সেন্টারের প্রধান ড. আহমেদ আল হাদ্দদ বলেছেন, বুর্জ্ খালিফায় বসবাসকারী মুসলমানদের তিনটি ভিন্ন সময়ে ইফতার করতে হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওই তিনটি অংশে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সূর্য অস্ত যেতে দেখা যায়।
‘আপনি কোথায় আছেন তা বিবেচ্য বিষয় নয়। আপনার প্রয়োজন কখন সূর্য ডোবে তার ওপর নজর রাখা। সূর্য না ডোবা পর্যন্ত আপনি ইফতার করতে পারেন না। সূর্য ডোবার বিষটি আপনার নিজ চোখে দেখা প্রয়োজন,’ বলেন আল হাদ্দাদ।
বুর্জ্ খালিফার নিচের দিকের তলা অর্থাৎ ৮০ তলার নিচে বসবাসকারী মুসলমানরা ইফতার করে থাকেন অন্য সকলের সঙ্গে; যখন দুবাই ও আশপাশের মসজিদগুলোয় মাগরিবের আজান দেয়, তখন।
৮০ তলা থেকে ১৫০ তলার মধ্যে বসবাসকারী মুসলমানরা ইফতার করবেন মাগরেবের আজান দেয়ার দুই মিনিট পর। এশার নামাজ আদায় করবেন আজান দেওয়ার দুই মিনিট পর থেকে। আর ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবে আজান দেয়ার দুই মিনিট আগে।
১৫০ কিংবা তারও উপরে বসবাসকারী মুসলমানরা ইফতার করবেন মাগরেবের আজান দেয়ার তিন মিনিট পর। অনুরুপভাবে তাদের এশার ওয়াক্তও শুরু হবে আজান দেয়ার তিন মিনিট পর। একই নিয়ম প্রয়োগ করা হবে ফজরের বেলাতেও। অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত শুরু হবে আজান দেয়ার তিন মিনিট আগে। সাহ্রির সময়সূচিও পরিবর্তন হবে ওপরের নির্দেশিকা মেনে।
ড. হাদ্দাদ বলেন, ‘আপনি যদি উড়োজাহজে ভ্রমণ করেন তাহলে যে এলাকার ওপর দিয়ে বিমানটি উড়ে যাচ্ছে, সেই এলাকার সূর্যাস্ত দেখে আপনাকে ইফতার করতে হবে। সূর্য উজ্জ্বল থাকলে আপনি ইফতার করতে পারবেন না।’