এন্ড্রু কিশোরের জন্যেই সিনেমায় গানের সুযোগ পেয়েছিলেন কুমার শানু
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৭, ২০২০ , ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। সিনেমার গানে তাঁর কণ্ঠ মানেই যেন হৃদয়ে কাঁপন। তাঁকে বলা হয় প্লে-ব্যাক সম্রাট। সত্তর দশকের শেষের দিকে প্লে-ব্যাক শুরু করার পর বাংলা, হিন্দিসহ বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার অসংখ্য গান স্থান করে নিয়েছে মানুষের হৃদয়ে, স্মৃতির মণিকোঠায়। শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন সারা জীবন গুনগুন করে যাবার মতো কিছু গান।
১৯৭৮ সালে ‘প্রতীক্ষা’ সিনেমায় তিনটি গান করেন এন্ড্রু কিশোর। তিনটি গানের একটি হলো ‘এক চোর যায় চলে’; এটি সুর করেছিলেন আলম খান। সিনেমাটিতে এন্ড্রু কিশোরের রেকর্ড করা তৃতীয় গান হলেও এটি রিলিজ হওয়া প্রথম গান। গানটি মুক্তির পর তখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আর যেটা এন্ড্রু কিশোর প্রথমে গেয়েছিলেন, সেটা রিলিজই হয়নি। একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে ‘এক চোর যায় চলে’ গানের পেছনের গল্প বলেছিলেন এন্ড্রু কিশোর। সে গল্পই এখানে তুলে ধরা হলো..
শিবলী সাদিকের পরিচালনায় ‘তিন কন্যা’ সিনেমাটিতে যখন গান হয়, তখন কলকাতায় বাংলাদেশের তিন সংগীত পরিচালক—আলাউদ্দিন আলী, সুজেয় শ্যাম আর আলম খান কাজ করছিলেন। এন্ড্রু কিশোরেরও সেখানে গান গাওয়ার কথা, কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে একটা শো করতে গিয়ে পাসপোর্ট জটিলতায় সেখানে প্রায় ২০/২৫ দিন আটকে গেলেন। পরে দেশে এসে বাসায় একটি চিঠি পেয়ে ইন্ডিয়ান ভিসা করে কলকাতায় গেলেন। সেখানে গান নিয়ে তাঁর জন্য তিনটি পার্টি অপেক্ষা করছিলো।
যেতে দেরি হওয়ায় কেদার ভট্টাচার্য নামের এক শিল্পী এরই মধ্যে ‘তিন কন্যা’ ছবির গান গেয়ে ফেলেছেন, যিনি পরবর্তী সময়ে ‘কুমার শানু’ নামে পরিচিতি পান। সুজেয় শ্যামের একটা-দুটা গান গাওয়ার পর তৃতীয় গানটা গাওয়ার জন্য যখনই কুমার শানু প্রস্তুত, তখন এন্ড্রু কিশোর গিয়ে স্টুডিওতে হাজির হলেন।
এন্ড্রু কিশোরকে দেখে একজন বললেন, ‘আমাদের শিল্পী এন্ড্রু চলে এসেছে, ওই ছেলেকে বের করে দাও।’ তখন এন্ড্রু কিশোর বললেন, ‘না, এটা হতে পারে না। উনি একজন শিল্পী। আমি তো এটা করতে পারি না।’
কুমার শানু তখন বাইরে এসে বলল, ‘তোমারই গান দাদা, প্রডিউসার চাইছে, তুমি গান গাইবে না কেন? আমি তোমার তিন-চারটা গান গেয়ে ফেলেছি দাদা। আমার আর দরকার নেই। আমার জীবনে রেডিওতে গান গাইনি, কোথাও গান গাইনি। তোমার দেরি হওয়ায় সিনেমায় প্রথম গান গাওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলাম। ব্যস, মেরে দিলাম।’
এই কথা কুমার শানু আজো মনে রেখেছে। পৃথিবীর যে জায়গাতেই এন্ড্রু কিশোর গিয়েছেন, শানু নিজে থেকে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন, খোঁজখবর নিয়েছেন।