করোনা পরীক্ষায় কিট সংকট
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৫, ২০২০ , ২:৩১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : দেশে করোনার নমুনা পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে কিটের সংকট দেখা দিয়েছে। আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চাহিদার তুলনায় কম কিট সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও নমুনা পরীক্ষায়কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। করোনার নমুনা পরীক্ষাকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশে কিট মজুত কত আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সেটা না জানানোয় অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। তারা কিটের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্পষ্ট করে বলতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার সাথে জড়িতদের অনেকে জানিয়েছেন, এখন নমুনা সংগ্রহ কমিয়ে দেয়া হয়েছে এবং একেবারে প্রয়োজন ছাড়া পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে দেশে সংক্রমণের উচ্চহারের মুখে ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেটের কথা বলা হলেও এখন ১৬ বা ১৭ হাজারের মধ্যে তা সীমাবদ্ধ থাকছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে- কিট নয়, ল্যাবরেটরির অভাবে পরীক্ষার ক্ষেত্রে জট লেগে যাচ্ছে।
করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু করা হয়েছিল ঢাকায় আইইডিসিআর’র ল্যাবরেটরি থেকে। সংক্রমণ শুরুর তিন মাস পর একটি ল্যাব থেকে ল্যাবের সংখ্যা ৬২তে নেয়া সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি ল্যাবরেটরিই ঢাকায় এবং বাকিগুলো বিভিন্ন বড় শহরে। এগুলোর মাঝেও ল্যাব সংক্রমিত হয় এবং সেজন্য সব ল্যাব একসাথে চালু রাখা যায় না। ফলে প্রতিটি ল্যাবেই নমুনার জট লেগেই আছে বলে বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সরকারের সাথে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৫৪টি বুথ বসিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজ করছে। এই বুথ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্র্যাকের কর্মকর্তা মোর্শেদা চৌধুরী বলেছেন, ল্যাবের পাশাপাশি কিটের সংকটের কারণে এখন নমুনা সংগ্রহ কমানো হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডমিটারের হিসাবে বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখ লোকের মধ্যে ৪ হাজার ২৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার প্রতি ২৫০ জনে একজনকে পরীক্ষা করতে পারছে। দেশে করোনা মহামারির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে এই সংখ্যা খুবই নগণ্য।
এবিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বর্তমানে সব দেশেই করোনা পরীক্ষা কিটের চাহিদা বেশি বলে প্রয়োজনীয় কিট পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশে কিটের যে মজুত আছে, তাতে ঘাটতি হবে না। আর কোনো কারণে সংকট তৈরি হলেও তা খুব দ্রুত মেটানোর ব্যবস্থা সরকার নিয়েছে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ৯টি জেলায় ১২টি পরীক্ষাকেন্দ্রে কিটের সংকট রয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে ৩ থেকে ৪ দিন পরীক্ষা চালানোর মতো কিট মজুত রয়েছে। আর প্রতিদিন সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৫ থেকে ৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা বন্ধ থাকছে।
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের (বিআইটিআইডি) পরীক্ষাকেন্দ্রে কিটের সংকট আছে বলে জানা গেছে। এবিষয়ে বিআইটিআইডির ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ দিনের কিট রয়েছে।
সিলেটে কিটের সংকট রয়েছে। কিটের বিষয়ে সিলেটে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কমিটির চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, বর্তমানে প্রায় এক হাজার কিট রয়েছে। এটা দিয়ে পাঁচ দিন পরীক্ষা করা যাবে।
এদিকে ফরিদপুরে কিট মজুত আছে একদিনের। এবিষয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের ল্যাব কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম বলেন, আমাদের মজুত কিট দিয়ে আর মাত্র এক দিন পরীক্ষা করা যাবে। অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার পরীক্ষা করা সম্ভব। তাই কিট পাওয়া না গেলে শুক্রবারে পরীক্ষা করা সম্ভব হবে না।
প্রসঙ্গত, আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার কিট সংগ্রহ, বিতরণ ও মজুতের তথ্য দিত। সর্বশেষ ১১ এপ্রিল কিটের মজুতের তথ্য জানানো হয়। এরপর কিটের মজুত জানায়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।