করোনা পরীক্ষা হবে সরকারি হাসপাতালেই
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৭, ২০২০ , ৭:২২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : দেশে করোনা পরিস্থিতির শুরুতে শুধু আইইডিসিআরেওই নমুনা পরীক্ষা হচ্ছিল। রোগী বাড়ার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন ২২টি গবেষণাগারে নমুনা পরীক্ষা চললেও এখনও পরীক্ষায় অন্যান্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে। আইইডিসিআর প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা করছে। এদিকে করেনা পরিস্থিতি এখনও এমন পর্যায়ে যায় নাই যে বেসরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা সম্প্রসারিত করতে হবে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে নমুনা পরীক্ষা সম্প্রসারিত করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। করোনা মহামারীর শুরুতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচ) যত বেশি সম্ভব নমুনা পরীক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, যত বেশি রোগী চিহ্নিত করা যাবে, তাদের আলাদা করে ফেলতে পারলে বিস্তার ঠেকানো যাবে। এ প্রসঙ্গে আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করেছিলেন তারা। আর তা মার্চ থেকেই তারা বলে আসছেন। পর্যায়ক্রমে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় নমুনা পরীক্ষা করা যেতে পারে। আমরা একটা খসড়া তৈরি করেছিলাম, তাতে একটা গাইডলা্ইন তৈরির কথা। আরটি পিসিআর ল্যাব যাদের আছে, তারা সেখানে পরীক্ষা করতে পারবে। তিনি বলেন, কোয়ালিটি কন্ট্রোলের জন্য আইইডিসিআরের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকতে হবে। ডেটাগুলো আইইডিসিআরকে দেবে। এই কাজের জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি তারা নিতে পারবে। পুরো বিষয়টি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঠিক করে দেবে। আরেকটা বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। তাদেরকে অবশ্যই করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য একটি আইসোলেশন ইউনিট চালু করতে হবে। যাদের এ ধরনের ওয়ার্ড থাকবে, তারাই টেস্টিং সুবিধা পাবে। এদিকে বেসরকারি হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা করার প্রয়োজন এখনও হয়নি বলে দাবি করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান। তিনি বলেন, তারা সরকারি হাসপাতালগুলোর সুবিধা কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। এজন্য বর্তমানে ২২টি গবেষণাগার পুরোদমে কাজ করলে পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়বে। এছাড়া আরও ১০টি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্য বায়োসেইফটি লেভেল-২ মানের গবেষণাগার আছে কি না, তাও বিবেচনায় নিচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিনি আরও বলেন, আমরা সরকারি অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চাচ্ছি। বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় পরীক্ষা করালে একটা বাড়তি খরচ হবে। সেটাও সরকারকে দেখতে হবে। এসময় রোগীর পরিমাণ বেড়ে গেলে পরিস্থিতি বিবেচনায় বেসরকারি হাসপাতালের সুবিধা কাজে লাগাবে সরকার বলেও জানান তিনি। তিনি জানান, যদি দেখা যায় রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে যাচ্ছে, তাদের সহায়তা লাগবে। তখন আমরা বেসরকারি হাসপাতালের দিকে যাব। কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলে রাখা আছে। সিচুয়েশান ডিমান্ড করলে সেটা করতে হবে। বাংলাদেশ বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. এনামুর রহমান বলেন, ৭০ বেসরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের মধ্যে বর্তমানে ১০টিতে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। বাকি মেডিকেল কলেজগুলোয় পিসিআর মেশিন থাকলেও সেগুলো কাজ করে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। যাদের ছিল সবাই তো বলে মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন মেশিন আনলে চালু হবে। তবে ১০টার মধ্যে পরীক্ষা করার মেশিন আছে বলতে পারেন। বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, তাদের সংগঠনের আওতায় থাকা হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর মধ্যে মাত্র তিনটিতে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সুযোগ আছে।