কুড়িগ্রামে ছিন্নমূল মানুষের পাশে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৮, ২০২০ , ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতির এই দুর্যোগকালে দিনমজুর ও হতদরিদ্র মানুষদের পাশাপাশি খাদ্য সংকটে পড়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন, ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষ। বিভিন্ন হোটেল রেস্তরাঁর উচ্ছিষ্ট, রাস্তায় ফেলে দেওয়া কিংবা মানুষের দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে থাকেন তারা। কিন্তু করোনার কারণে সব বন্ধ থাকায় ছিন্নমূল মানুষগুলোও পড়েছেন চরম খাদ্য সংকটে। এসব মানুষের কথা বিবেচনা করে তাদের জন্য এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছেন কুড়িগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম দম্পতি ও একজন নৈশ প্রহরী। রৌমারী উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী প্রতি রাতে বাজারে থাকা মানসিক ভারসাম্যহীন, ভবঘুরে, ছিন্নমূল মানুষের জন্য খাবার রান্না করে বিতরণ করেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেন কর্তিমারী বাজারের নৈশ প্রহরী আজাহার আলী। প্রতি রাতে ৮-১০ জন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করছেন তারা। মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোঘলবাসা ইউনিয়নের মালভাঙ্গা গ্রামে। তিনি চাকরি সূত্রে ১৯৯৪ সাল থেকে রৌমারীতে অবস্থান করছেন। নুরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে কর্তিমারী বাজার এলাকার ভাড়া থাকেন। তিনি বলেন, ‘করোনাকালে ভবঘুরে মানুষগুলো যে কতটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন তা চোখে না দেখলে বোঝার উপায় নাই। তাই সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। ওদের মুখে খাবার দিতে পেরে মনে তৃপ্তি পাই। আমার মা এমন লোকদের খুব আদর যত্ন করতেন।’ করোনার প্রভাব স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য এ খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। নৈশপ্রহরী আজাহার আলী বলেন, ‘নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর সহায়তায় প্রতিদিন রান্না করা খাবার বাজারে থাকা পাগলদের (মানসিক ভারসাম্যহীন) মাঝে বিতরণ করা হয়। করোনাকালে আমি নিজেও অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি মাত্র।’ প্রায় ১২ দিন ধরে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। আজাহার আলী বলেন, ‘গত কয়েকদিন এভাবে রান্না করা খাবার দেওয়ায় প্রতি রাতে বাজার চত্বরে থাকা পাগলগুলো (মানসিক ভারসাম্যহীন) প্লেট নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। আমরা খাবার নিয়ে এলে তারা সেই খাবার খান। মানুষগুলোর মুখে তখন একটা স্বস্তির ছাপ দেখা যায়।’