গোলকধাঁধায় আটকে বেসামাল সাকিব
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: নভেম্বর ১, ২০২৩ , ৪:১২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস
দিনের শেষে প্রতিবেদক : রাজসিক সৌন্দর্যের বীরত্বগাথা। সাফল্যগাথায় সবচেয়ে বড় মুকুট যুক্ত হয়ে গেল কিছুক্ষণ আগে। সব এখন তার জন্য প্রস্তুত। কেবল সিংহাসনে চড়ে বসার অপেক্ষা। আলোঝলে মঞ্চ। কত বাহারি রঙ। কতশত মানুষ দাঁড়িয়ে তার অপেক্ষায়। নাম তুলে স্লোগান। ব্যানার কিংবা ফেস্টুনে ছাপানো ছবি। কত হাসি। কত উৎসব। সতের কোটির একজন হয়ে বাধার দেয়াল টপকে কিভাবে বিশ্বজয় করতে হয় দেখিয়ে দিলেন। এখন কেবল শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি, শিরোপা হাতে নেওয়ার পালা। বিশ্বকাপ উঠে গেল বাংলাদেশের ক্রিকেটের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের হাতে! খুঁজে পেল সেরার ঠিকানা।
কল্পনার আকাশে এরকম কত স্বপ্নের উড়াউড়ি, ক্যানভাসে শত রঙের ছড়াছড়ি। কিন্তু সব যেন ওই কল্পনাতেই থেকে যায়। বাস্তবে রূপ দিতে পারে না। পূরণ হয় না অরাধ্য সেই স্বপ্ন। জয় করা হয়না শিরোপা। শক্তি, সামর্থ্যে, অবস্থান, মানসিকতা ও বিশ্বাসে যোজন-যোজন পিছিয়ে থাকায় শ্রেষ্ঠত্বের সেই পুরস্কার আর পাওয়া হয় না। তাতে অপূর্ণতা নিয়েই শেষ হয় ক্রিকেটের ছোট্ট দুনিয়ার যাত্রা।দীর্ঘশ্বাস…
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং; তিন বিভাগেই বাংলাদেশের করুণ দশা। কোনো বিভাগেই নেই দলগত সাফল্য। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাদে নেই কারো ব্যক্তিগত অর্জনও। তাতে ব্যাটিং ও বোলিং দুর্দশার চিত্রই এঁকেছেন ক্রিকেটাররা। কেন বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বের হচ্ছে না, কেন ব্যাটসম্যানরা রান পাচ্ছেন না, কেন বোলারা দিতে পারছেন না সাফল্য…উত্তর নেই সাকিবের কাছেও। অকপটে স্বীকার করা সাকিব বলেছেন,‘আমরা উত্তর খোঁজার চেষ্টায় আছি। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছি না।’
সেই একই কোচ এখন বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে। কিন্তু সাকিবকে নিয়ে তার কোনা পরিকল্পনাই কাজে আসছে না। এখানে ব্যর্থ কে হয়েছেন তা স্পষ্ট। হাথুরুসিংহে-সাকিবের জুটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছেন। সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্সেও সাকিব নিজে বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। একই সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন, ‘আমার যেদিন মনে হবে আমি প্যাসেঞ্জার, ড্রাইভার নই, সেদিন আমি নিজ থেকেই সরে দাঁড়াবো।’ পাফরম্যান্সের বিচারে সাকিব এখন ড্রাইভিং সিটে নেই। সেটা সাকিবই বাস্তবায়ন করবেন। নিজ থেকে সাকিব নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেছেন, ‘আমি আগে ব্যাটিং করেছিলাম। কিন্তু তৃপ্তি পাইনি। আমার আত্মবিশ্বাস একদমই কম।’
দলের প্রয়োজনে অধিনায়কের যা করার দরকার ছিল সেদিকে না হেঁটে উল্টো আগুনে ঘি ঢেলেছেন। সাক্ষাৎকারে, এক সময়ের প্রিয়তম বন্ধুকে বানিয়েছেন খলনায়ক। স্বার্থপর, টিমম্যান নন বলতেও দ্বিধা করেননি। দলে যে বিভাজন রেখা তৈরি হয়েছে সেটা সাকিব নিজেও নিশ্চিত নন। ‘হতেও পারে’ বলে মত দিয়েছেন।
সাকিব এই দায় থেকে তো আড়াল হতে পারেন না কিছুতেই। সাকিবের কণ্ঠের মতো বলতে হয়, ‘বিশ্বকাপ জিততে হলে অধিানয়কের পারফর্ম করতে হয়।’ আগের বিশ্বকাপে ৬০৬ রান করা সাকিব এবার ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী। অধিনায়ক পারফর্ম করেননি, ঠিকঠাক নেতৃত্বও দিতে পারেননি। পারেননি গোটা দলকে এক করে রাখতেও। পুরোনো সেই কথার গোলকধাঁধায় আটকে গেছেন সাকিব নিজেও।