চট্টগ্রামে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ : জেলেদের মুখে খুশির ঝিলিক
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৭, ২০২০ , ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর বেশি পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জানিয়েছেন জেলেরা। ইলিশের প্রজননের সময় ধরা বন্ধ রাখায় এখন সাগরে প্রচুর ইলিশ মিলছে। ফিশারিঘাটসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপকূলীয় ঘাটে বড় ইলিশের ছড়াছড়ি। একইসঙ্গে সীতাকুণ্ডের সমুদ্র উপকূলের জেলেপল্লীগুলোতে উৎসবের আমেজ চলছে।
ওখানকার উপকূলীয় ঘাটগুলোতে প্রচুর ইলিশ আসছে। সাগরপার থেকেও ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বড় ইলিশ। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে খুশি। জেলেরা জানান, গত ৩-৪ দিন ধরে সন্দ্বীপ উপকূলসহ সাগরের বিভিন্ন পয়েন্টে ইলিশ ধরা পড়ছে। খবর পেয়ে শত শত জেলে নৌকা ও জাল নিয়ে ইলিশ শিকারে নেমে পড়েছেন। নগরীর ফিশারিঘাট ও রাসমণিঘাটে প্রতিদিন ভিড়ছে ইলিশ বোঝাই শত শত নৌকা-ট্রলার। জেলেপল্লীতে আনন্দের বন্যা বইছে। গভীর সমুদ্রে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ায় চট্টগ্রামের ১০ হাজার জেলে পরিবারের মুখে এখন হাসি। তবে এত ইলিশ ধরা পড়লেও বাজারে ইলিশের দাম এখনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
নগরীর কাট্টলী ও ফিশারিঘাটে জেলেরা ১ কেজির উপরের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি করছেন ৩০-৩৮ হাজার টাকায়। আর ১ কেজির নিচের মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২৮-২৯ হাজার টাকায়। খুচরা বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা দরে। একাধিক জেলে জানান, দীর্ঘ ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। এ সময় কোনো জেলেই মাছ শিকারে যাননি। ২৩ জুলাই রাত থেকে মাছ শিকার শুরু হয়েছে। প্রথম থেকেই জেলেদের জালে বড় বড় ইলিশ ধরা পড়ছে। চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সবার সহযোগিতায় ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। ফলে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮৮ টন ইলিশ ধরা পড়ে। চলতি অর্থবছরে ইলিশের পরিমাণ ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে।
প্রতি কেজি মাছের দাম পাঁচশ’ টাকা হলে চলতি অর্থবছরে শিকার হওয়া ছয় লাখ টন মাছের দাম কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা হবে। বর্তমানে বিশ্বের ৭৫ শতাংশ ইলিশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হচ্ছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে দেশে ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৯০ হাজার টন। ১০ বছর পর এসে গত বছর উৎপাদিত হয়েছে ৫ লাখ টনের বেশি। এবার তা ছয় লাখ টনে উন্নীত হলে বাংলাদেশে বিশ্বের ৮৫ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হবে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, ৬৫ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ রাখায় এখন ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছে। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য বিরাট একটি অবদান। এতে জেলেরা উপকৃত হচ্ছেন। জেলে পরিবারগুলোকে সহায়তা দিয়ে জাটকা নিধনে নিরুৎসাহিত করার সুফল মিলছে। বহু বছর পর চট্টগ্রামের মাছের বাজারে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ দেখা যাচ্ছে। নগরীর হালিশহর, আনন্দবাজার, জেলেপাড়া ও জেলার উপকূলীয় উপজেলা সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সন্দ্বীপ ও মিরসরাইয়ের প্রায় ১০ হাজারের বেশি জেলে পরিবারের জীবন-জীবিকা সাগরে মাছ ধরা ও বেচাবিক্রির ওপর নির্ভরশীল। মৎস্য ব্যবসায়ী তোষাণ দাশ জানান, মাছ ধরার শুরুর দিন থেকে সাগরে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ পড়ছে।