আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১ হাজার কোটি টাকা

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১ হাজার কোটি টাকা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২০, ২০২১ , ১:০৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতিতে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশের বেশি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। লক্ষ্যমাত্রা যদি অর্জন করতে হয়, তাহলে বাকি তিন মাসে রাজস্ব আদায় করতে হবে আরও এক লাখ ৫৩ হাজার ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করছেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত দুই লাখ ২৭ হাজার ৭৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে এক লাখ ৭৬ হাজার ৮০৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ঘাটতি ৫০ হাজার ৯৫৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ১১৭ কোটি ৭ লাখ টাকা।
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশের বেশি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম রাজস্ব আদায়ে সংকটে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিদের। সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনা মহামারিসৃষ্ট কঠোর বিধিনিষেধ। এ অবস্থান থেকে যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হয়, তাহলে বাকি তিন মাসে রাজস্ব আদায় করতে হবে আরও এক লাখ ৫৩ হাজার ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যা প্রায় অসম্ভব। গত অর্থবছরের তুলনায় ৬.৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সামনের তিন মাসে আরও এক লাখ ৫৩ হাজার ১৯১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা আদায় করতে হবে এনবিআরের।
এনবিআর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) ৬.৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে সাময়িক হিসাবে মোট এক লাখ ৭৬ হাজার ৮০৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির তিন বিভাগে। এর মধ্যে মার্চ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ভ্যাট খাত থেকে। এ খাতে আদায় হয়েছে ৬৭ হাজার চার কোটি ৭৪ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ২.৮৮ শতাংশ। শতাংশ হিসাবে সাফল্য দেখিয়েছে আমদানি ও রফতানি শুল্ক খাত। এ খাতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১২.১৭ শতাংশের বেশি রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আদায় হয়েছে ৫৩ হাজার ৯৯৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে, মার্চ পর্যন্ত আয়কর খাতে ৫৫ হাজার ৮০৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে আদায় হয় ৫২ হাজার ৮৪৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৫৯ শতাংশ। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যথাক্রমে ১২.৫৯, ৮.৯৬ ও ২.৫৭ শতাংশ।
যদিও এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম করোনাকালীন আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক বলে প্রাক-বাজেট উপলক্ষে বিভিন্ন আলোচনায় দাবি করে এসেছেন। এ বিষয়ে এনবিআরের তিন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, মার্চ মাসে যতটুকু আদায় হয়েছে, সামনে রাজস্বের প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে। রোজার ঈদ উপলক্ষে অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতি আসে। রাজস্ব আদায়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। লকডাউনে সবকিছু আরও পিছিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ মুহূর্তে এনবিআরের বাড়তি কোনো ঊদ্যোগ নেওয়ারও সুযোগ নেই।
এদিকে, লকডাউনের আগে এনবিআর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ হাজার কোটি টাকা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছে। যা চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। এরপর আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়।