চিনির দাম কারসাজি : মীর গ্রুপকে জরিমানা, কারাদণ্ড
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৮, ২০১৬ , ৮:০৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
কাগজ অনলাইন ডেস্ক: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রমজানের শুরুতেই শুরু হওয়া জেলা প্রশাসনের বাজার মনিটরিং টিম দ্বিতীয় দিনের মত অভিযান অব্যাহত রেখেছে। প্রথম দিন খুচরা বাজার রিয়াজ উদ্দিন বাজার, কাজীর দেউড়ির পর এবার পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে হানা দেয় তিনজন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রের নেতৃত্ব জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত। তাদের সহযোগিতা করে র্যাবের একটি দল।
বুধবার সকালে থেকে চলা অভিযানে নের্তৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান, আবদুস সামাদ ও হাসান বিন আলী।
অভিযানের শুরুতেই র্যাবের এএসপি জালাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য নিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হমিলুর রহমানসহ তিন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম হানা দেন মীর গ্রুপে। আগে থেকেই ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে তথ্য ছিল তারা চট্টগ্রামের স্বনামধন্য একটি চিনি কারখানা থেকে কম দামে চিনি ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রি করছে।
এমন অভিযোগের সত্যতা মিলে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন নথিপত্র ঘেটে দেখা যায়, তারা কর্ণফুলীর ওপারের একটি চিনি কারখানা থেকে ৪৬ টাকা ৮০ পয়সায় চিনি কিনে পাইকারি বাজারে ৫৮ টাকা ৫০ পয়সা বিক্রি করছে।
চিনি নিয়ে এ ধরনের কারসাজির অভিযোগে মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম ও সেলস ম্যানেজার জানে আলমকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া আদালতকে অসহযোগিতা করায় হিসাব সহকারী মফিজুল হক ও সজল সেনগুপ্তকে এক সপ্তাহ করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে মীর গ্রুপের অফিস সিলগালা করে দেয় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান। এসময় ক্যাব সদস্য জান্নাতুল ফেরদৌসসহ বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, অভিযোগ রয়েছে ভোগ্যপণ্য মজুদ করে অতিরিক্ত মুনাফা করছেন খাতুনগঞ্জে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে রমজানের নিত্যপণ্য ছোলা। এছাড়া তেল, চিনি, ডাল মসলা জাতীয় পণ্য বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এখানে। যার প্রভাব পড়েছে খোলা বাজারে। ফলে রমজানে বাজার দর স্থিতিশীল রাখতে খাতুনগঞ্জে অভিযান শুরু করা হয়।
মীর গ্রুপের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে চিনিতে কারসাজির অভিযোগে মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম ও সেলস ম্যানেজার জানে আলমকে ১০ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া আদালতকে অসহযোগিতা করায় হিসাব সহকারী মফিজুল হক ও সজল সেনগুপ্তকে এক সপ্তাহ করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
একই দিন একই এলাকায় ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমানের নের্তৃত্বে অপর অভিযানে কম দামে ছোলা-ডাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করায় আশরাফ হোসেন মাসুদের মালিকানাধীন মাসুদ ব্রাদার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সতর্ক করা হয় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রূপন দাশকে। এছাড়া একতা স্টোর, আদর্শ ভাণ্ডার, মুক্তা স্টোর ও লক্ষ্মী ভাণ্ডারের কেনাবেচার রশিদ পরীক্ষা করা হয়।
এর আগে গত ৩১ মে চট্টগ্রামের আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় আসন্ন রমজান মাসে ছোলা, তেল, চিনি, ডাল প্রভৃতি পণ্যের বাজারে দামবৃদ্ধির কারসাজিতে ধরা পড়লেই জরিমানার পরিবর্তে সরাসরি জেলখানায় পাঠানো হবে বলে ব্যবসায়ীদেরকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। রোজার প্রথম দিনের ভ্রাম্যমান আদালত নগরী কাজীরদেউড়ি ও রেয়াজউদ্দিন বাজারে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে তিন ব্যবসায়িকে দন্ড দেওয়ার পাশাপাশি চার ব্যবসায়িকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মূল্য তালিকা না টাঙ্গানো, পাইকারি পণ্য কেনার সময় রশিদ না দেওয়া এবং পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতে কয়েকগুণ পার্থক্য থাকায় তাদের সাজা ও জরিমানা করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান