ছলচাতুরি করে চলছে যানবাহন
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৮, ২০২০ , ৪:৩২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////
দিনের শেষে প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের কারণে স্বভাবতই সারাদেশের মানুষ তটস্থ। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা দুই শতাধিক পার হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারও কঠোর অবস্থানে। করোনা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়টি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানে থাকলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না যানচলাচল। যাত্রীরা নানা ধরনের ছলচাতুরি করে ঠিকই তাদের যানবাহন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ ছাড়ছেন ঢাকাও। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে এখনো অস্বাভাবিক গাড়ি চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। এই গাড়িগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ব্যক্তিগত। কোনো কোনো গাড়িতে আবার যাত্রী পরিবহন করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স সেবার নামে অধিক মুনাফার লোভে যাত্রী পরিবহন করছেন অনেকে। তবে এ সকল যাত্রীদের ব্যাপারে পুলিশও কঠোর অবস্থানে। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা চেকপোষ্টগুলোতেও কঠোর অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি গাড়িকেই থামিয়ে চালককে জেরা করছে। বাহিরে বের হ্ওয়ার সঠিক কারণ না জানাতে পারলে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের জরিমানার মামলা। চালকরা বলছেন, জরুরী কাজেই তারা রেব হচ্ছেন। এখন পুলিশ যদি আমাদের কথা বিশ্বাশ না করে তবে আর কি করার আছে। মামলা দিলেও বের হতে হবে। বাবু বাজার ব্রিজের সামনে কথা হয় মাইক্রোবাস চালক আলী ইমামের সাথে। তিনি বলেন, জরুরী কাজেই বের হয়েছি। তারপরেও তিন হাজার টাকার মামলা দিয়ে দিল। এখন আর কি করার এই টাকা তো পরিশোধ করতেই হবে। পুলিশ বলছে, আমাদের চেকপোষ্টগুলোতে সব গাড়িকেই থামানো হচ্ছে। যদি কেউ বের হওয়ার সঠিক কারণ না জানাতে পারে তবে তাদের মামলা দেওয়া হচ্ছে। ট্রাফিক সার্জেন্ট সুমন বলেন, গাড়ি চালকরাও আমাদের সাথে চালাকি করছেন। যাদেরকে একবার মামলা দেওয়া হয়েছে তারা আবার বের হলে আর মামলা দেওয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে তাদরে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ডেমরা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাবিউল ইসলাম বলেন, অহেতুক গাড়ি চলাচল বন্ধ করতে আমারা কঠোর অবস্থানে আছি। সব গাড়িকেই থামিয়ে বের হওয়ার ব্যাপারে কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে। কেউ অহেতুক বের হলেই আইনঅনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর বাহিরেও অনেককেই মানবিক কারণে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের নির্দেশে বলা আছে জরুরি প্রয়োজনে বের হতে পারবে। তাই জরুরি প্রয়োজন হলে তাদেরকে আটকানো যাচ্ছে না। ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলো থেকে অনেকেই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় প্রবেশ করছে। এ ব্যপারে রাবিউল ইসলাম বলেন, কেউ যদি রোগী সেজে অভিনয় করে সেক্ষেত্রে আমাদের আর কি করার থাকে। তবে যানচলাচল কমাতে আমরা সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কারওয়ান বাজারে গাড়ি নিয়ে বাজার করতে আসা এক ব্যক্তির সাথে কথা হলে তিনি জানান, বাসায় কিছু সবজি আছে। তারপরেও সামনের দিনগুলোর জন্য আরো কিনে রাখলাম। সামনে আরো খারাপ দিন আসলে চলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। এদিকে বাংলাদেশ পুলিশের সদ্য দায়িত্ব পাওয়া ইন্সপেক্টর জেনারেল জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহুমাত্রিক উদ্ভাবনী উপায়ে নির্ভীকভাবে সন্মানিত নাগরিকদের পাশে থেকে অহর্নিশ কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশনার সাথে সমন্বয় রেখে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক প্রণীত সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বৈশ্বিক এ সংকট মোকাবিলায় পুলিশের নানাবিধ উদ্যোগ সাম্মানিত নাগরিকদের আশান্বিত করেছে, বাড়িয়েছে তাদের মনোবল। বিশ্বব্যাপী এ সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের ইতিবাচক কার্যক্রমসমূহ ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে প্রচারে সহযাত্রী হয়েছে আমাদের মিডিয়া হাউজগুলো, একান্ত সহযোগী হিসেবে পাশে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ অকৃত্রিম বন্ধু, একান্ত সুহৃদ সাংবাদিকগণ। তাদের সার্বিক কর্মকুশলতার ফলেই সম্ভব হয়েছে করোনা সংক্রান্ত গুজব মোকাবেলা। একই সাথে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা, যারা প্রতিনিয়ত জনগণের পাশে থেকে তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করছেন। তিনি আরও বলেন, করোনা সংক্রমনের এই দুর্যোগে বাংলাদেশ পুলিশের পাশে থেকে জনসেবায় সহযোগিতা করার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াসহ সকল মিডিয়ার সাংবাদিক ও কলাকুশলী বন্ধুদের। বাংলাদেশ পুলিশ এও আশা করে, শুধু করোনাভাইরাস নয়, দেশের যে কোন প্রয়োজন, কল্যাণ ও সংকটে পারস্পরিক এ সহযোগিতা আগামীতেও অবারিত থাকবে।