ছাত্রলীগের পদ পেতে বিতর্কিতদের দৌড়ঝাঁপ
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০ , ১২:৫৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: রাজনীতি
দিনের শেষে প্রতিবেদক : কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। পদপ্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। এর মধ্যে থেমে নেই বিতর্কিতরাও। অনেকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্য, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে, তারাও নেতৃত্বের দৌড়ে যুক্ত হয়েছে। গত বছরের ২৭ জুলাই কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন হলেও কমিটি দিতে পারেনি তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে পদচ্যুত করা হলে পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ সৃষ্টি হয়।
আল নাহিয়ান খান জয় সভাপতি এবং লেখক ভট্টাচার্য সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পর কমিটি গঠনের গুঞ্জন উঠে। তবে করোনা সব কিছু থামিয়ে দেয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবারো কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে পদপ্রত্যাশীরা শীর্ষ পদে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তবে থেমে নেই বিতর্কিতদের দৌড়ঝাঁপ। পদ পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তরা।
কমিটিতে জায়গা পেতে দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক সহ-সভাপতি সজল মজুমদার। তিনি ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার ছাত্রত্বও শেষ হয়েছে। কমিটিতে শীর্ষ পদ পেতে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক সহ-সভাপতি চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি বেশ কিছুদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন।
কলেজ ছাত্রলীগের আরেক সাবেক সহ সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন। তিনি সদরঘাটে বেশ কিছু কুলি নিয়োগ করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি নিয়োমিত মাশোয়ারা পান। এছাড়া তার ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমুর বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার পারিবারের কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়। রিয়াজুল ইসলাম পাভেল, তিনি গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগে পদ পেতে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন মেহেদী হাসান মিলন। তিনি কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে।
কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগে পদ চান ওয়াসিম তাহসান রানা। তিনিও গত কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হাসানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত রানার বিরুদ্ধে কলেজে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাজিদুল ইসলাম সোহেল। তার বিরুদ্ধে মাছ ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। সাবেক উপ-সম্পাদক ইয়াসিন আল অনিক। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার কারণে থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এছাড়া গত আগস্ট মাসে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল খান। তার বিরুদ্ধে ফুটপথে চাঁদাবাজি এবং ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক মো. মাইনুল খানের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচয় দেন। কমিটি গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেন, আমাদের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। এখন আমরা একটি ভালো সময়ের অপেক্ষায় আছি। স্কুল কলেজ খোলার আগ মুহূর্তেই আমারা কমিটি ঘোষণা করবো। কমিটিতে অবশ্যই পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী শিক্ষার্থীদের জায়গা দেয়া হবে। অভিযুক্তদের আসার সুযোগ নেই। এছাড়া কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের প্রতি ডেডিকেশন এবং পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড দেখা হবে।