জাতীয় পার্টির কোনো বাজেট দেইনি
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৭, ২০১৬ , ১২:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী হিসেবে জাতীয় পার্টির কোনো বাজেট দেননি বলে সংসদে জানিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী হিসেবে টানা আটবার এবং জাতীয় পার্টির আমলে দুইবার বাজেট পেশ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি জাতীয় পার্টির বাজেট দিয়েছি, সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি জাতীয় পার্টির কোনো বাজেট দেইনি।
মঙ্গলবার (০৭ জুন) সকালে জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর উত্থাপিত দাবির বিষয়ে যুক্তি দিতে গিয়ে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
এদিন সকাল সোয়া ১০টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের কার্যসূচি শুরু হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি জাতীয় পার্টির কোনো বাজেট দেইনি। আমি জাতীয় পার্টির জন্মের আগে সব বাজেট দিয়েছি। এটা আপনারা ভালো করে মনে রাখবেন। আমি কোনোদিন জাতীয় পার্টির কোনো বাজেট দেইনি। আমি জেনারেল এরশাদ সাহেবের বাজেট দিয়েছি, যেটা নির্দলীয় সরকার ছিল।
অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন করায় নাম উল্লেখ না করে এক নেতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন বিশিষ্ট নেতা আমার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ঐতিহ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন, তার প্রশ্ন করাটা স্বাভাবিক। কারণ তার জন্মের আগে আমি একজন প্রসিদ্ধ রাজনীতিবিদ ছিলাম। আমার সময় আমি অন্যতম ছাত্রনেতা ছিলাম। এটা তার অবশ্য জানার সুযোগ হয় নাই, কেননা পড়াশুনা তাদের মধ্যে তেমন একটা আসে না।
আমলাতন্ত্রের কারণে বাজেট বাস্তবায়ন হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দোষ দেওয়া যায়, কিন্তু আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই এজন্য যে, আমরা যে বাজেট দিয়েছি তারা তাদের জীবনে এত বড় বাজেট দেখেন নাই। যা গত ৭ বছরে ৯১ হাজার কোটি থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। চ্যালেঞ্জটা অনেক বড়, সেটার সাথে যে তারা চলতে পারছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের রাজস্ব যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। তার আগের বছরগুলোতে সব সময় কম হয়েছে। কিন্তু এরকম কম হয় নাই। আমি এটা আমলে নেই নাই, এই ঘটনা আমলে না নিয়ে আগামী অর্থবছরের বাজেটের হিসাব করেছি। কারণ এই যে স্থবিরতা বা একটু খানি শৈথিল্য এটা সাময়িক। তবে এটার পরিবর্তন করা জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। তবে এটা সত্যি কথা দুর্নীতি ‘কস্ট অব প্রজেক্ট’ বাড়িয়ে দেয়।
সব জিনিস নিয়ে অন্য দেশের সঙ্গে সব সময় তুলনা করা উচিত নয় বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা মনে রাখা উচিত এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সাথে তুলনা সময় সময় ঠিক হয় না। যেমন বাংলাদেশে পাথর আমদানি করতে হয়, ভারত বা অন্য দেশে পাথর আমদানি করতে হয় না। তাই অন্য দেশের সাথে তুলনা করে বাজেটে হিসাবে নিলে চলবে না।
মেগা প্রকল্প সম্পর্কে বিভিন্ন সময় দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের অনেক পরে মেগা প্রকল্প নিয়েছি। অনেক দেরিতে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। ৪৫ বছর পার হয়ে গেছে। তবে আমাদের অগ্রগতির যে লক্ষ্য, আমর মনে হয় মেগা প্রকল্প আমরা এখন গ্রহণ করতে পারি। আমরা মেগা প্রকল্পর দিকে নজর দিয়েছি, একটা বইও দিয়েছি।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে বিভিন্ন বৈদেশিক সংস্থা ও বিভিন্ন জনের মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক সংস্থায় যে ধরনের হিসাব দেয় সেটা সবসময়ই একচুয়াল (প্রকৃত) থেকে কম হয়। সেজন্য জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৭.০৫-এর কম করা উচিত না। আমি নিশ্চিত ৭.০৫ থেকে কম কখনো হবে না। আমাদের প্রতিষ্ঠিত ব্যুরো অত্যন্ত উৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠান। তারা যে হিসাব দেয় সেটা সত্যি।
স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনি তিন মাস পরেই দেখবেন অন্যান্য বিদেশি সংস্থা ৭.০৫ গ্রহণ করবে। ওদের প্রজেকশনের ধারণা আসলে স্টাডি করে হয় না। প্রজেকশন দেওয়ার দরকারে দেয়। একজন সংসদ সদস্য বলেছেন লক্ষ্যমাত্র ৬ থেকে ৭ এ উপনীত হয়েছে। তাহলে আপত্তি কেনো? আপত্তির কোনো কারণ নেই।