আজকের দিন তারিখ ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
এক্সক্লুসিভ টাকা-মোবাইলের স্ক্রিনে করোনা ভাইরাস জীবিত থাকে ২৮ দিন

টাকা-মোবাইলের স্ক্রিনে করোনা ভাইরাস জীবিত থাকে ২৮ দিন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ১২, ২০২০ , ১২:৩৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: এক্সক্লুসিভ


দিনের শেষে ডেস্ক : আরো কঠিন সতর্কতা দিলেন বিজ্ঞানীরা। তারা বললেন, ব্যাংকনোট বা টাকা, ডলার, রুপি বা যেকোন নোটে, মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে, এমনকি স্টিলের ওপর ২৮ দিন পর্যন্ত জীবিত থাকে করোনা ভাইরাস। ঠান্ডা আবহাওয়ায় এই ভাইরাসের দ্রুত বিকাশ ঘটে। এ জন্য বেশ কিছু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান লেনদেন করছে ‘ক্যাশলেস’ বা নগদ অর্থহীন ব্যবস্থায়। নতুন এক গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, কতটা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত এই ভাইরাস। এমন গবেষণা করেছে কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্স অর্গানাইজেশন (সিএসআইআরও)। গবেষকরা বলেছেন, যেহেতু করোনা ভাইরাসের ঠান্ডা আবহাওয়ায় দ্রুত বিস্তার ঘটে, তাই অস্ট্রেলিয়া এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি ইতিবাচক অবস্থানে আছে। কারণ, তারা গ্রীষ্মের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গরমে এই ভাইরাস কাবু হয়ে পড়ে। এর সুবিধা পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। গবেষণায় আরো দেখা গেছে, সুনির্দিষ্ট কিছু সারফেসে বা তলে ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে করোনা ভাইরাস ১০ দিন বেশি স্থায়ী হয়। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
এতে বলা হয়েছে সিডনির উলওয়ার্থস মেট্রোতে এবং মেলবোর্নে ৯টি স্টোরে এরই মধ্যে কেনাকাটা হচ্ছে বিশেষ এক পদ্ধতিতে। সেখানে কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করতে বাধ্য হচ্ছেন লোকজন। এ প্রক্রিয়া সেখানে চলছে পরীক্ষামুলকভাবে। এই প্রক্রিয়ায় ১২ই অক্টোবর থেকে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে সিডনির দ্য রোজবেরি স্টোর, এবং মেলবোর্নের কলফিল্প নর্থ সুপারমার্কেট। আরবিএ’র সাম্প্রতিক এক কনজুমার পেমেন্ট সার্ভেতে দেখা গেছে, সব কেনাকাটায় নগদ অর্থের ব্যবহার কমে গেছে শতকরা ২৭ ভাগ। সিএসআইআরও-এর ওই গবেষণা অস্ট্রেলিয়ায় করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সহায়ক হবে বলে মনে করেন অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিপেরডনেস-এর উপ পরিচালক ড. ডেবি ঈগলস। তিনি বলেছেন, আমরা দেখতে পেয়েছি বিভিন্ন সারফেস বা তলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দীর্ঘ সময় থাকতে পারে। এক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং সব তল বা সারফেস পরিষ্কার রাখার মতো ভাল অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেটাকে কক্ষ তাপমাত্রা ধরা হয়, তাতে আমরা দেখতে পেয়েছি এই ভাইরাস চরমভাবে সক্রিয় থাকে। তারা কাচ, মোবাইলের স্ক্রিন এবং প্লাস্টিকের ব্যাংকনোটের মতো মসৃণ তলের ওপর বেঁচে থাকতে পারে ২৮ দিন পর্যন্ত। তিনি আরো বলেছেন, এই গবেষণায় দেখা গেছে এই ভাইরাসটি কতটা ভয়াবহ। বিশেষ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ ভাইরাসের তুলনায়। কারণ, ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ ভাইরাস একই অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে মাত্র ১৭ দিন পর্যন্ত। কিন্তু করোনা ভাইরাস প্লাস্টিক ব্যাংকনোটের চেয়ে পেপার ব্যাংকনোটের ওপর বেশিদিন বেঁচে থাকতে পারে।
এএমপির প্রধান অর্থনীতিবিদ শ্যেন অলিভার বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে কার্ডে পাওনা পরিশোধ পদ্ধতির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এরই মধ্যে নগদ অর্থের পরিবর্তে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড এবং ফোনের মাধ্যমে লেনদেনকে বেছে নিয়েছি। আমি মনে করি, করোনা ভাইরাস এই ধারাকে ত্বরান্বিত করেছে। তিনি আরো বলেন, যখন আপনি দোকানে যাবেন তখন আপনি আপনার ফোন বা কার্ড ব্যবহার করলে সেখানে আপনাকে টাকার মতো কিছু স্পর্শ করতে হচ্ছে না। উল্লেখ্য, বিভিন্ন পরীক্ষামুলক তলের ওপর কৃত্রিম মিউকাস সৃষ্টি করে তার ওপর করোনা ভাইরাসকে শুকিয়ে তার ওপর গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এক মাস ধরে এই ভাইরাসের ওপর বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং তারপর তা আলাদা করে গবেষণা করা হয়েছে যে, এ অবস্থায় কতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস। এই গবেষণায় দেখা গেছে, তাপমাত্রা যখন ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পায় তখন উল্লেখযোগ্যভাবে করোনা ভাইরাসের বেঁচে থাকার হার কমে আসে।
সিএসআইআরও-এর প্রধান নির্বাহী ড. ল্যারি মার্শাল বলেছেন, করোনা ভাইরাসের বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই গবেষণা করা হয়। এতে পরীক্ষা করা হয় এই ভাইরাস বিভিন্ন তলে আসলে কতদিন বেঁচে থাকতে পারে এবং তা আমাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর মাধ্যমে আমাদের জনগণকে সুরক্ষিত রাখার একটি ভাল পথ বেরিয়ে এসেছে। আমি আশা করি আমাদের এই সমাধানের ফলে আমাদের মধ্যে যেসব বাধা বিপত্তি ছিল তা নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারবো। এর মাধ্যমে ভাইরাসের হটস্পটও নির্ধারণ করা সহজ হবে। অর্থনীতিকেও সচল রাখা সহজ হবে। আমরা অস্ট্রেলিয়ান সায়েন্সকে ব্যবহার করে টিম অস্ট্রেলিয়া হিসেবে এই ভাইরাসকে পরাজিত করতে পারি। কাজ করতে পারি শিল্প, সরকার, গবেষণা ও অস্ট্রেলিয়ান সম্প্রদায়ের সঙ্গে একত্রিতভাবে।