আজকের দিন তারিখ ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য তামাকজাত পণ্যের কর ফাঁকির হাতিয়ার হবে ‘মূল্যস্তর প্রথা’

তামাকজাত পণ্যের কর ফাঁকির হাতিয়ার হবে ‘মূল্যস্তর প্রথা’


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১২, ২০১৬ , ৩:৫৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


Tamakকাগজ অনলাইন প্রতিবেদক: ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে তামাকজাত পণ্যের কর আরোপের জন্য ‘মূল্যস্তর প্রথা’ তুলে না দিলে, এটি কর ফাঁকির প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করেছে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলো।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে `তামাক কর : বাজেট প্রতিক্রিয়া ২০১৬-১৭` শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। প্রজ্ঞা ও অ্যান্টিটোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) উদ্যোগে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহ বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

তিনি জানান, এবারের বাজেটে প্রস্তাব ছিল সিগারেটের কর নির্ধারণের জন্য মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিয়ে সুনির্দিষ্ট শুল্ক আরোপ করা। কিন্তু মূল্যস্তর প্রথার তুলে দিতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। এই প্রথা বিলুপ্ত না হলে ভবিষ্যতে কর ফাঁকির পথ আরো সুগম হবে।

ড. রুমানা হক জানান, এবারের বাজেট তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া কাঠামোগতভাবে শুধু অপর্যাপ্ত নয়, ত্রুটিপূর্ণও। দামি সিগারেটের বিদ্যমান কর ৪৫ শতাংশ বহাল রাখায় আবারো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে রেহাই দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, কম দামি সিগারেট ও বিড়ির ওপর প্রস্তাবিত কর হার পণ্য দুটির মূল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হলেও ব্যবহার কমানোর জন্য কার্যকরী নয়। পক্ষান্তরে জর্দা ও গুলের ওপর সম্পূরক শুল্কের হার প্রায় ৬৭ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।

জাতীয় হার্ট ফাউডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল মালিক বলেন, বাংলাদেশকে ধুমপান মুক্ত করতে হবে। কারণ যুবক সমাজ প্রথমে ধুমপানে আসক্ত হয়, এরপর ড্রাগের (মাদক) দিকে এগিয়ে যায়।

তিনি বলেন, সরকারের ইচ্ছা আছে ধুমপান বন্ধ করার। তবে কার্যকর অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নেই। ইচ্ছা থাকলে হবে না, অ্যাকশনে যেতে হবে। মূল্যস্তর তুলে দিয়ে কর বাড়াতে হবে। তাহলে জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদনের আগে তামাকজাত পণ্যের ওপর কর আরোপের জন্য কয়েকটি সুপারিশ বাজেটে রাখার প্রস্তাব করা হয়। এগুলো হলো, সিগারেটের ওপর কর আরোপের জন্য মূল্যস্তর প্রথা তুলে দিতে হবে, সব ধরনের সিগারেটের ওপর একই হারে অর্থাৎ খুচরা মূল্যের ৭০ শতাংশ এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপ করতে হবে, বিড়ি ওপর উচ্চ হারে সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ ট্যাক্স আরোপ করতে হবে, তামাকের ব্যবহার কমাতে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সিগারেটের সমপরিমাণে কর আরোপ করতে হবে, তামাকের কর প্রশাসন শক্তিশালী করা, কর সংগ্রহ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং কর ফাঁকি রোধে তামাক পণ্যের শুল্ক মুক্ত বিক্রয় প্রথা তুলে দিয়ে কর আরোপ করা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তামাক পণ্যের ওপর ২ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করা, তামাকের চুল্লিপ্রতি বার্ষিক ৫ হাজার টাকা লাইসেন্সিং ফি আরোপ করা, এখান থেকে আদায়কৃত অতিরিক্ত রাজস্ব আয় তামাক নিয়ন্ত্রণ এবং অসংক্রামক রোগ মোকাবিলায় করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন, উবীনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আক্তার, অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সর (আত্মা) কো-কনভেনার নাদিরা কিরন, দ্য ইউনিয়নের কনসালট্যান্ট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, প্রত্যাশার সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ প্রমুখ।