আজকের দিন তারিখ ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// তিস্তার পর ভয়ঙ্কর রূপে ব্রহ্মপুত্র

তিস্তার পর ভয়ঙ্কর রূপে ব্রহ্মপুত্র


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১৪, ২০২০ , ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক : ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট, তিস্তা ও করতোয়াসহ সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গাইবান্ধার ফুলছড়ি ঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি গত ১২ ঘণ্টায় ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে ঘাঘট নদীর পানি ১২ ঘণ্টায় ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে গাইবান্ধা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। পানির চাপে বাঁধ ভেঙে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশের আতঙ্কে রয়েছে জেলার কয়েক লাখ মানুষ।

গাইবান্ধা জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের ২৬টি ইউনিয়নের এক লাখ ৪৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দি মানুষ উঁচু স্থানে মাচা করে বা বাঁধে আশ্রয় নিলেও দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, গত সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। কয়েকদিনের ব্যবধানে সেই পানি প্রবাহ এখন বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার উপরে। পানির চাপে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী জানান, জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের এক লাখ ৪৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে এক লাখ ২২ হাজার ৩২০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব মানুষের জন্য এ পর্যন্ত ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১৫ লাখ টাকা, শিশুখাদ্য চার লাখ, গোখাদ্য দুই লাখ ও ১৮ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারির একদিন পরই কমতে শুরু করেছে তিস্তার পানি। পানিবন্দি পরিবারগুলো ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে জেলার ৫ উপজেলায় তীব্র ভাঙনে ঘরবাড়িসহ ফসলি খেত ইতোমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। যার স্বাভাবিক মাত্রা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। গত দুই দিন ধরে লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার ৫ উপজেলায় নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশল রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করে। মঙ্গলবার সকালে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, নতুন করে পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য ১২০ মেট্রিক টনসহ মোট ২৪৪ মেট্রিক টন খাদ্যসামগ্রী ও নগদ ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলার ৫ উপজেলায় ত্রাণ বিরতণ অব্যাহত রয়েছে।