আজকের দিন তারিখ ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন : ম্যাক্রোঁ-ল্যাভরভের ঢাকা সফর, থকাছে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন : ম্যাক্রোঁ-ল্যাভরভের ঢাকা সফর, থকাছে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ , ৩:৪৪ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : ঢাকার কূটনৈতিক ক্যালেন্ডারে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমার্ধ হতে চলেছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময়ে একাধিক হাইপ্রোফাইল সফর নির্ধারিত রয়েছে, যেখানে হতে পারে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও সমঝোতা। শুরুটা হবে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ঢাকা সফর দিয়ে। এর চারদিন পরেই, অর্থাৎ আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ। এ দুটি সফরই ঢাকার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রায় ৩৩ বছর পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখতে চলেছেন। আর কোনো রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসার ঘটনা এটাই হবে ইতিহাসে প্রথমবার। এর মধ্যে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে নয়া দিল্লি যাবেন। এই জোটের এবারের শীর্ষ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসেবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ার এই ব্যস্ততা নিয়ে প্রতিবেদন করেছে ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দু। এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি শেখ হাসিনা জোহানেসবার্গে ব্রিকসের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা শেষে ফেরার কয়েকদিন পরেই ঢাকা সফরে যাচ্ছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক অধঃপতনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে রয়েছে বাংলাদেশ। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তিতে না গিয়ে ব্রিকস দেশগুলোর দিকে ঝোঁকার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি রোসাটম রূপপুরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ল্যাভরভের সফর আশা জাগিয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ হয়তো শিগগির সম্পন্ন হবে। ২০২২ সালের অক্টোবরে নির্মাণস্থলে রিঅ্যাক্টর ভেসেল স্থাপনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা এবং রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। রোসাটমের সঙ্গে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলারের চুক্তিটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম চুক্তি। এর প্রায় ৯০ শতাংশ অর্থায়নই করছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হওয়ায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। ঢাকা সফরকালে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং এটি স্পষ্ট যে, উভয় পক্ষই তৃতীয় মুদ্রায় কিস্তি পরিশোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করতে পারে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক অংশীদার দেশের জন্যই রাশিয়াকে মার্কিন ডলারে অর্থপ্রদান কঠিন হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কোর বেশ কিছু অর্থ চীনা মুদ্রা ইউয়ানে পরিশোধ করা হয়েছে; যেমনটি করেছে ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলো। তাই ল্যাভরভের ঢাকা সফরে গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ এই সফরে বেশ কিছু আর্থিক ও ভূরাজনৈতিক প্রবণতা প্রতিফলিত হতে পারে। ঢাকা সূত্র জানিয়েছে, দেশে ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনা শেষ করে আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দিল্লি পৌঁছাবেন শেখ হাসিনা এবং পরবর্তীতে জি-২০ সম্মেলনে ফের মুখোমুখি হবেন তারা। কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, শেখ হাসিনা নয়া দিল্লিতে থাকাকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে পারে। তবে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে দেশে ফেরার তাড়া থাকায় এবার হয়তো আজমির শরীফ পরিদর্শনে যেতে পারবেন না বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

২০২১ সালে প্যারিসে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন এমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং তারপর থেকে উভয় পক্ষই প্রতিরক্ষা সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার সঙ্গে ফ্রান্সের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ১৭শ শতাব্দীতেও ঢাকায় বাণিজ্য মিশন ছিল প্যারিসের। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল ফ্রান্স। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার কৌশলগত অবস্থান জোরদারে মনোনিবেশ করেছে এবং ঢাকার সঙ্গে প্যারিসের সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা এখন দৃষ্টিসীমার মধ্যে। দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এগুলো ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকার যে চাপের সম্মুখীন হচ্ছে, সে বিষয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্টকে সরাসরি অবহিত করার সুযোগ দেবে ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফর। বাংলাদেশ সফর করা সবশেষ ফরাসি প্রেসডেন্ট ছিলেন ফ্রাঁসোয়া মিটাররান্ড। ১৯৯০ সালে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।