দ্রুত সংস্কার করা হোক রাজধানীর সড়কগুলো
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৫, ২০২০ , ১:৫১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
এবার বর্ষা মৌসুমে রাজধানীতে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। মতিঝিল, দিলকুশার মতো বাণিজ্যিক এলাকায় সড়কের অবস্থা করুণ। এ চিত্র কেবল মতিঝিলের নয়, রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় এখন রাস্তা ভাঙাচোরা। বর্ষা মৌসুমে পানি জমে অনেক ভালো রাস্তাও ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ। জনদুর্ভোগের বিষয়টি গণমাধ্যমে বারবার আসছে। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সাময়িক কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও দুর্ভোগ অবসানে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের উভয় অংশে বছরজুড়েই চলছে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি। দিন, সপ্তাহ পেরিয়ে কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এসব সড়ক চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে না। এসব সড়ক পেরিয়ে নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে চালকের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে পড়ছে, ঘটছে দুর্ঘটনাও। জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কিছু ভিআইপি ও মূল সড়ক ছাড়া অবশিষ্ট সড়কগুলোর বেশিরভাগেরই একই অবস্থা। বর্তমানে দুই সিটিতে প্রধান সড়কসহ অলিগলি মিলিয়ে মোট রাস্তার পরিমাণ ৩ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। ভিআইপি সড়কগুলো নিয়মিত সংস্কার করা হয়। বাকি সব সড়কে কাজ হয় দায়সারা গোছের। সিটি করপোরেশনের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো সড়কের খনন করার প্রয়োজন দেখা দিলে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে তা শেষ করতে হবে। আর বর্ষা মৌসুমের আগেই সব খোঁড়াখুঁড়ি শেষ করে মেরামত কাজ শেষ করতে হবে। বাস্তবে কি তা মানা হয়। রাস্তা মেরামত ও আধুনিকায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা গণমাধ্যমকে বলছেন, রাজধানীর রাস্তা তৈরিতে বিটুমিন ব্যবহার করা হয়। বিটুমিনের প্রধান শত্রæ পানি। ভালো রাস্তায় পানি জমলেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। তারা প্রত্যেকটি আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে ভাঙা রাস্তার তথ্য সংগ্রহ করছেন। যেগুলোর অবস্থা বেশি খারাপ, সেগুলো মেরামত করে দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই সেগুলো আধুনিকায়নের কাজও শুরু হবে। প্রতি বছর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সড়ক সংস্কারে হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে। সড়ক সংস্কার ও উন্নয়ন কাজ করা হয় জনগণের করের টাকায়। অথচ এর কোনো সুফল জনগণ পায় না, এটি সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। রাজধানীর রাস্তাঘাট চলাচলের উপযোগী রাখতে হলে নিয়মিত সংস্কার প্রয়োজন। সেই সঙ্গে দৃষ্টি দিতে হবে নির্মাণসামগ্রীর দিকে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তার বিটুমিন উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে সেই গর্ত বড় হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন থেকে কংক্রিটের রাস্তার কথা বললেও তার তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আমরা আশা করব, সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের পাশাপাশি টেকসই রাস্তা নির্মাণে উভয় সিটি করপোরেশন উদ্যোগী হবে। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরবাসীর ভোগান্তি প্রশমনে ত্বরিত বাস্তবোচিত পদক্ষেপ নেবে- এমনই প্রত্যাশা।