নাটোরে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২১ , ২:২১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিআইডি কর্মকর্তা খন্দকার আতিকুর রহমানের স্ত্রী সুমি বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে নাটোর সদর উপজেলার পাইকোরদল গ্রামবাসী সুমি বেগম ও তার মা দিলারা বেগমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে রাতেই ওই গৃহকর্মীর মা বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় মামলা করেন।নির্যাতিত ওই গৃহকর্মীর নাম শ্যামলী (১২)। সে সদর উপজেলার পাইকোরদল গ্রামের মঞ্জিল হোসেনের মেয়ে । পুলিশ ও নির্যাতিত গৃহকর্মী পরিবার সূত্রে জানা যায়, অভাবের কারণে শ্যামলীকে তার বাবা-মা মাসিক ১২০০ টাকা বেতনে তিন বছর আগে ঢাকায় সিআইডি পুলিশে কর্মরত উপপরিদর্শক খন্দকার আতিকুর রহমানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দেন। এরপর থেকে তাকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে আর দেখা করতে দেননি তারা। শ্যামলীকে কাজে নেওয়ার ৮ মাস পযৃন্ত নিয়মিত বেতন পাঠিয়েছেন ওই পুলিশ দম্পত্তি। এর পর আর কোন টাকা দেননি তারা। শ্যামলীর মা নার্গিস বেগম অভিযোগ করেন, শ্যামলীকে কাজে নেওয়ার এক মাস পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে গৃহকর্ত্রী সোমা তার মেয়েকে বকাঝকা ও নির্যাতন শুরু করেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তার শরীরে গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা এবং বৈদ্যুতিক প্লাস দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়া তুলে ফেলে। তার মেয়ের মাথা ও হাত-পায়ের আঙ্গুলসহ গোটা শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে।
গৃহকর্মী শ্যামলী জানায়,কাজে একটু ভুল করলেই তাকে প্রচুর মারধর করা হতো। জোরে কান্না করলে আরও বেশি মারা হত। তবে গৃহকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক তাকে মা বলে ডাকতেন। তিনি তাকেনিজের মেয়ের মতো আদর করতেন। শ্যামলীকে মারপিট করার জন্য স্ত্রীকে বকাঝকা করতেন। অধিকাংশ সময় তার অনুপস্থিতিতে শ্যামলীর ওপর নির্যাতন চালানো হতো।
এলাকাবাসী জানায়, শ্যামলীর পরিবার বারবার বলার পর বুধবার বিকেলে সুমি বেগম ও তার মা গৃহকর্মী শ্যামলীকে নিয়ে পাইকোরদোল গ্রামে আসেন। এ সময় শ্যামলীর শরীরে আঘাতের চিহৃ দেখে গ্রামবাসীর সন্দেহ হয়। তখন জানতে চাইলে শ্যামলী তার ওপর চলা নির্যাতনের কথা জানায়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে গ্রামবাসী পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী সুমি বেগম ও তার মাকে আটক করে । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. তারেক জুবায়ের জানান, পুলিশের একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার এবং নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত সুমা বেগম আটক করেছে। এই ঘটনায় বুধবার রাতেই ভিকটিমের মা একটি মামলা রুজু করেছেন। ঘটনার তদন্ত করে যা সামনে আসবে সেভাবেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, আইন সবার জন্য সমান। এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।