নির্দেশনা কার্যকর করতে হবে সরকারকেই
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৪, ২০২১ , ১২:০১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়
লকডাউন উপেক্ষা করে এবারের ঈদে বাড়ি ফিরতে রাজপথ ও ফেরিঘাটে মানুষের ঢল নেমেছিল। একই অবস্থা কর্মস্থলে ফেরার পথেও দেখা যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে লকডাউন শিথিলের পর করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আবারো শুরু হয়েছে কঠোর বিধিনিষেধ। চলবে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যস্ত। জানা গেছে, ঈদের পরের দিন থেকে ফেরিঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ফেরিঘাটে যাত্রী চাপের খবর গণমাধ্যমে আসছে। ঢাকায় এসে গণপরিবহন না থাকায় গ্রাম থেকে ফিরতে তাদের সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তেমনি ব্যয়ও বাড়ছে। বিশেষ করে আগের দিন রাতে বাসে করে ঢাকার সীমানায় এসে এরপর হেঁটে ঢুকছে। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য সুরক্ষার সামগ্রিক যে ক্ষতি তা পুষিয়ে নেয়া সত্যিই কঠিন হবে। গত ঈদে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় সারাদেশেই সংক্রমণের হার বেড়েছে। এখন ঢাকায় সংক্রমণের হার কম। গ্রামে বেশি। গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে মানুষ আবারো শহরকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে এভাবে দেশের সর্বত্র মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর উচ্চ হার কমিয়ে আনার পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমাতে সরকার ১ জুলাই দুই সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছিল। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৮ দিনের জন্য তুলে নেয়া হয় কঠোর লকডাউন। তবে বিধিনিষেধ শিথিলে কুরবানির পশুর হাট, শপিংমল, মার্কেট ও অন্যান্য জনসমাগমস্থলে স্বাস্থ্যবিধি তেমন মানা হয়নি। অনেকেই ঢাকা থেকে বাস, ট্রাক, লঞ্চে গাদাগাদি করেই ঈদ করতে ফিরে গেছেন গ্রামে। সব মিলিয়ে ঈদের পর এবার করোনা সংক্রমণ কোথায় ঠেকবে এবং সে পরিস্থিতিতে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটুকু সামাল দিতে পারবে, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরনটি ইতোমধ্যে আমাদের দেশে তছনছ করছে। গত এপ্রিল মাস থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে, প্রতিদিন গড়ে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে। তবে পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে জুলাই থেকে পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে মৃত্যু সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় দুইশর কোটা। এটির সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি; তাই প্রথমত নিজের সুরক্ষার স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধির সব নিয়ম অত্যন্ত কঠোরভাবে মেনে চলা জরুরি। করোনা সংক্রমণের উল্লম্ফন ঠেকাতে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে সরকার ‘কঠোর’ অবস্থানে থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। শুধু সরকার নয়, আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। যার যার অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে। মানুষজনের অবাধ চলাচল দেখে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়। তাই মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সরকারকে কঠোর হতে হবে। যারা স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানবে না তাদের জরিমানার পাশাপাশি প্রয়োজনে কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।