পঞ্চগড়ে বেহাল টুনিরহাট দেবীগঞ্জ সড়কের বেহালদশা
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০ , ১:০৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ
পঞ্চগড় প্রতিনিধি : এক বছরের ব্যবধানে সংস্কার কাজের পর সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা আবার খানা-খন্দে ভরে গেছে। আরো প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কার্যাদেশ দেয়া হলেও ঠিকাদার ইচ্ছামতো কাজ করার পাশাপাশি অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে দেড় বছরেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ অবস্থায় ব্যস্ততম জনগুরুত্বপূর্ণ পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট হয়ে বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ, বড়শশী, টোকরাভাসাসহ ভাউলাগঞ্জ হয়ে দেবীগঞ্জ যাওয়ার ৪৫ কিলোমিটারের বেশির ভাগ সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙা সড়কটিতে দিনে রাতে কয়েক হাজার সব ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। ইজিবাইক উল্টে যাওয়ার নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে প্রতিদিন লাখো মানুষ দুর্ভোগের শিকার হওয়াসহ সময় ও খরচ বেশি লাগার কারণে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে বোদা জিসি টু ভাউলাগঞ্জ জিসি সড়কের প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয়। প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার টাকায় কাজটি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রেইনকো ট্রেডার্স।
দায়সারাভাবে কাজ শেষ করায় সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই আবারো সড়কটির ওই অংশ খানা-খন্দে ভরে যায়। গত বছরের আগস্ট মাসে ওই সড়কটির কালিয়াগঞ্জ থেকে বড়শশী পর্যন্ত প্রায় ৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজ শুরু হয়। ৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএইচ কর্পোরেশন অ্যান্ড মীম ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। এক বছর ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের আগস্টে কাজটি শেষ করার কথা ছিল। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করার অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। সড়কটির একাধিক স্থানে পিচ ঢালাইয়ের পর ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। বড়শশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১৮ সালে সড়কটির যে অংশ সংস্কার করা হয়েছিল তাতে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যেই সড়কটি নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করার জন্য পিছ ঢালাইয়ের একমাসের মধ্যে ফাটল ধরার পাশাপাশি ভেঙে যাচ্ছে। ঠিকাদার এক বছরে যেটুকু অংশ কার্পেটিং করেছে তা ফেটে যাচ্ছে। এখন পুরো সড়ক জুড়ে সারি সারি গর্ত। ইজিবাইক চালক রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বড় বড় খাল হয়েছে রাস্তায়। যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে আমাদের বিপদে পড়তে হয়। খালের জায়গায় যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয়।
পরে পথচারীদের সহযোগিতা নিয়ে ইজিবাইক ঠেলে পার করতে হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের জুন মাসে ১ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৬৪ টাকা ব্যয়ে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা ঠাকুরগাঁওয়ের রেইনকো ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কার করেছে। কিন্তু ২০১৯ সালে ওই জায়গায় আবারো খানা-খন্দে ভরে গেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।
পঞ্চগড় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুজ্জামান বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। বৃষ্টিপাতের কারণে ঠিকাদারকে সংস্কার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ওভারলোড নিয়ে যানবাহন চলাচল করার জন্য সড়ক অল্পতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়কটির খানা-খন্দে ভরা অংশটুকু চলতি অর্থ বছরেই মেরামত করে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।