পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে : মো. তাজুল ইসলাম
পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২২, ২০২৩ , ৫:৪৫ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে প্রতিবেদক : স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বেসরকারি খাত, এনজিওদের পক্ষ থেকে ফিকাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট ও সলিড বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং পৌরসভা এলাকায় কীভাবে এটি আরো কার্যকর ও আর্থিকভাবে টেকসই করা যায়, তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সিটি স্যানিটেশন অ্যান্ড ফসিল সলিড ম্যানেজমেন্ট লার্নিং শেয়ারিং’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ ও ভোরের কাগজ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে তিনি বলেন, এমডিজি অর্জনের পর বাংলাদেশ সরকার এসডিজি-২০৩০ এজেন্ডা অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা বাংলাদেশকে গ্লোবাল নর্থের দেশগুলোর সমকক্ষ দেখতে চাই। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনস্বাস্থ্যের চিফ ডাইরেক্টর (প্রধান পরিচালক) মো. এসএমএ রশিদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের অধ্যাপক ড. তানভীর আহমেদ, ওয়াশ স্পেশালিস্ট মো. শফিকুল আলম, সুইডেন অ্যাম্বাসির পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রথম সচিব নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম, জনস্বাস্থ্যের প্রধান প্রকৌশলী মো. সারেয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (এমসিসি) মেয়র মো. একরামুল হক টিটু বক্তব্য রাখেন। এসময় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হকের হাতে এনজিও ফোরামের পক্ষ থেকে সম্মাননা তুলে দেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চিন্তা ও চেতনার সঙ্গে বর্জ্যকে সস্পদে রুপান্তর করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি এই খাতে লজিস্টিক সাপোর্ট ও অর্থায়ন বাড়ানের ওপর জোর দেন তারা। এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, টেকনোলজি ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একটি দেশ জাপান। আমরা সবাই জানি পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় তারা অনেক সচেষ্ট। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ মার্কিন ডলার, যা এখন ২ হাজার ডলার। তিনি আরো বলেন, আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি এবং অর্থনীতিতে গতি আনছি। আমরা আধুনিক হচ্ছি। পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতি না করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করছি। সেজন্যই জাইকার সঙ্গে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। তাজুল ইসলাম বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হলে সবার আগে নিজেদের সচেতন হতে হবে। শুধু সরকার বা একটি রাজনৈতিক দল কখনো কোনো কিছু পরিবর্তন করতে পারে না। সেজন্য আগে নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। সুইডেন অ্যাম্বাসির নায়োকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রম বলেন, বাংলাদেশের মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যাবস্থা অত্যন্ত জরুরি। সুইডেন অ্যাম্বাসির মধ্যেই বিভিন্ন এনজিওর সহায়তায় টাঙ্গাইল, জামালপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় শহর উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রজেক্টের (প্রকল্প) নিয়ে কাজ করছে। ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, প্রাধানমন্ত্রীর স্বপ্ন প্রতিটি গ্রাম হবে শহর, বাংলাদেশ দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা সবাই একটি উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি। এখানে সরকারি-বেসরকারি সব সেক্টর সমন্বিতভাবে কাজ করলেই একটি সুন্দর, উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া সম্ভব হবে। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এসডিজি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই কাজ করছি। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও এনজিওর সহায়তায় পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করে আমরা জনগণকে স্বস্তি দিতে পারছি। সারাদেশে এনজিও ফেরামের সহায়তায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক উন্নয়নে অনেকগুলো পাইলটিং প্রোগ্রামের কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, বর্জ্যগুলোকে কীভাবে সম্পদে রুপান্তরিত করে সেখান থেকে বিদুৎ উপাদন করা যায় সে লক্ষ্য কাজ করা হচ্ছে। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ সারাদেশে বিস্তর বর্জ্য ব্যাবস্থাপনার পরিধি বাড়াতে প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। তাই সঠিক ব্যাবস্থাপনার জন্য প্রচুর বিশেষজ্ঞ টিমের পাশাপাশি সঠিক পরিকল্পনা ও প্রয়োজনমাফিক অর্থায়ন প্রয়োজন।